গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঘুমন্ত অবস্থায় কবিতা নামে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাত করেছে আশিক নামে এক বখাটে যুবক ও তার সহযোগিরা। গুরুত্বর আহত স্কুলছাত্রী বর্তমানে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ অভিযুক্ত বখাটে আশিকসহ তার মাকে গ্রেফতার করেছে। তবে এখনো বখাটে আশিকের সহযোগিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের রামপুরা গ্রামে সোমবার গভীর রাতে। নির্যাতিত স্কুলছাত্রী হরিরামপুর ইউনিয়নের রামপুরা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত আশিকুর রহমান আশিক (২৪) পার্শ্ববর্তী নাকাইহাট ইউনিয়নের কুঞ্জ নাকাই গ্রামের ফজলুর রহমান কালুর ছেলে।
বুধবার দুপুরে হাসপাতালে গণমাধ্যমকর্মীদের স্কুলছাত্রীর স্বজনরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কবিতাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো বখাটে আশিক। স্কুলে আসা যাওয়ার সময়েও তাকে উত্যাক্ত করে আসছিলো বখাটে আশিক ও তার সহযোগিরা। আশিকের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়নি কবিতা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আশিক। গত সোমবার রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিলো স্কুলছাত্রী। এসময় বখাটে আশিক ৫-৬ জন সহযোগি নিয়ে তাদের বাড়িতে যায়। আশিক জানালার ফাঁক দিয়ে ঘুুমান্ত কবিতাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে কবিতার বুকসহ একটি স্তন কেটে যায়। এসময় তার চিৎকারে পরিবার ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় বখাটে আশিকসহ তার সহযোগিরা। রক্তাক্ত ও সজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্বজনদের দাবি, হত্যার উদ্দেশ্যে কবিতাকে ছুরিকাঘাত করে বখাটে আশিক। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কবিতা এখনো অনেকটাই সজ্ঞাহীন। ঠিক ভাবে কথাও বলতে পারছে না। ঘটনায় অভিযুক্ত আশিকসহ সহযোগিদের শাস্তির দাবি জানান স্বজনরা।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মেহেদী হাসান জানান, ঘটনার পর আশিকসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে স্কুলছাত্রীর বাবা। মামলার পর অভিযুক্ত আশিককে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার মাকেও আটক করা হয়েছে। আশিকের সহযোগিরা পালিয়ে থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাহাত গাওহারী। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তসহ জড়িতদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়াসহ ছাত্রীর পরিবারের নিরাপত্তায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর কথাও জানান তিনি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডা. মো. মাহাফুজুর রহমান বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে স্কুলছাত্রীর বুকসহ একটি স্তন কেটে গেছে। তার বুকে অন্তত ২০টির বেশি সেলাই দেয়া হয়েছে। প্রচু্র রক্তক্ষরণের কারণে কিছুটা অসুস্থ হলেও ভয়ের কোন কারণ নেই। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে সে বাড়ি ফিরতে পারবে।
Leave a reply