৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাকিবুল ইসলাম রাকিবের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাকিবের সাত মিনিট ২৭ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। সেখানে রাকিব ৪০ লাখেরও বেশি টাকা দিয়ে নেতা হয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। এমনকি ওই টাকা আগামী ছয় মাসে ডাবল হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রাকিব কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অনুসারি।
মঙ্গলবার রাতে প্রকাশ হওয়া অডিওতে শোনা যায় রাকিব অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সাথে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাহমুদুল হাসান নামে এক ছেলেকে নেতা বানানো নিয়ে দর কষাকষি করছিলেন।
অডিওতে রাকিব বলেন, ‘ঢাকা যায়ে খাটতে হয়। ঢাকা যেয়ে খাটতে বলতে কি, বহুত কাঠখড়ি আছে। তবে এখন আমার যে হিসাব নিকাশ, রাব্বানী ভাইয়ের সঙ্গে আমার যে সম্পর্ক, এ আঞ্চলিক, এ বিষয়টা আমি যদি ভাইরে বলি, আমার কথা শুনবে। ভাই অলরেডি আমাকে বলেছেও আঞ্চলিক বিষয়গুলো দেখার জন্য।’
একপর্যায়ে মাহমুদুলকে নেতা বানাতে খরচ কেমন হতে পারে এমন আলোচনাও হয়। এ সময় রাকিব ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা হতে চল্লিশ লাখের মত টাকা খরচ করেছে বলে অডিও থেকে জানা যায়।
অজ্ঞাত ব্যক্তি : তোমার (রাকিব) ইয়ে সম্পর্কে তুমি যেভাবে বলছিলে আরকি, বিভিন্নভাবে কমিটি ভাঙ্গা, গড়া, প্রিন্ট ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার খরচ টরচ দিয়ে তোমারতো একটা বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়ে গেছে।
রাকিব: হুমম.. হিউজ.. হিউজ..
অজ্ঞাত ব্যক্তি: সেই ফিগার তো আমি জানি, তা প্রায় মনে হয় চল্লিশের কাছে হবে।
রাকিব: হুমম।
রাকিব: না ভাই শোনেন কোনো ছেলেরে ইয়ে করতে গেলে… । এখন আমার যা খরচ হইছে এটা কোনো ব্যাপার না। ওইটা ছয় মাস গেলে সব ডাবল হয়ে যাবে, সমস্যা নাই। কিন্তু ওরে হচ্ছে ফোন দিতে কন আমি গিয়ে হচ্ছে দেখা করে আসবোনি।
অডিওতে জানা যায়, ইবি শাখা ছাত্রলীগের পূর্বের কমিটি ভাঙতেও কাজ করেন রাকিব। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করার জন্য কমিটি ভাঙা হয়। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের মাধ্যমে কমিটি ভাঙা হয় বলে স্বীকার করেন তিনি।
রাকিব : কমিটি যদি ভাঙে একজনের ওয়াইফের জন্য, বোর্ড করার জন্য। ম্যাথের বোর্ডটা স্থগিত করার জন্য। একজনকে করার জন্য আমরা কমিটি স্থগিত করি সিস্টেমে, সেটা আরেকটা লাইনে, এটা শোভনের লাইন। আমি তখন চিন্তা করলাম যে আমি একা নেতা হব?
সাইফুলের ওয়াইফ সে ব্যপারটা কম বলেনি..অনেক টাকা লাগবে, ৩০ লাখ টাকা লাগবে। হাইকোর্টে রিট করতে হবে, রায় কিনে নিয়ে আসতে হবে। সে লাইনও আছে, টাকা লাগবে। হাইকোর্টে এমন এমন জায়াগায় এমন এমন লাইন আপনি যেভাবে রায় চাইবেন রায় সেভাবেই দেবে, টাকা লাগবে। এসব পথ আমি পাড়ি দিয়ে আইছি, তো রায় মায় সব কিনা যায়, সব রায় কিনা যায়।
গত ১৪ জুলাই রবিউল ইসলাম পলাশকে সভাপতি এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি দেয় ছাত্রলীগ।
এ বিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিক কথোপকথন আমার না। কণ্ঠ নকল করে এটি তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। ওখানে চল্লিশের কথা উল্লেখ আছে। লাখ বা হাজারের কথা উল্লেখ নেই। হাইকোর্ট নিয়ে এমন কোনো কথা আমি কারো সঙ্গে বলিনি।’
তবে বারবার ফোন দেয়া হলেও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী কল রিসিভ করেননি।
Leave a reply