৩৭০ ধারা বিলোপ এবং এনআরসি নিয়ে ভারতজুড়ে চলছে মোদি সরকারের সমালোচনা। কংগ্রেসসহ বিরোধী দল ক্রমাগত সরকারের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের বর্তমান ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার কথা।
চলতি বছরে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে থাকায় কাশ্মীর, এনআরসি এসবে মন না দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেতারা।
তবে এতো সব সমালোচকদের মাঝেও ভারতের সর্ববৃহৎ মুসলিম সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দকে পাশে পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
মোদি যা করছেন ঠিকই করছেন বলে সাফ জানিয়ে দিলেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাদানি।
পাশাপাশি পাকিস্তানের কড়া সমালোচনাও করেছেন মুসলিম সংগঠনটির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরের মানুষদের রক্ষাকবচ হিসাবে ব্যবহার করে পাকিস্তান এই উপত্যকাকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে। সেক্ষেত্রে মোদি সরকারের ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত একেবারেই ঠিক। কাশ্মীর থেকে বিশেষ মর্যাদা তুলে নিলেও আমাদেরই থাকবে। না তুলে নিলেও আমাদেরই থাকবে। জুম্মু-কাশ্মীরের অধিবাসী মানেই ভারতীয়।’
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অনুষ্ঠিত বার্ষিক সভায় এসব বলেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
সংগঠনটির সর্বোচ্চ নেতা মাহমুদ মাদানি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ৩৭০ ধারা বিলোপের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে জুম্মু-কাশ্মীরের বন্ধন আরও মজবুত হয়েছে। আর এভাবে ভারতের সঙ্গে সার্বিক ঐক্যের মধ্যেই কাশ্মীরিদের উন্নতি লুকিয়ে রয়েছে।’
পাকিস্তান কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন উসকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
কাশ্মীরে ভারত বিরোধী যেকোনো বিক্ষোভ জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ সমর্থন করে না জানিয়ে মাহমুদ মাদানি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ কাশ্মীরকে ধ্বংস করতে চায়। তারা কাশ্মীরকে রাজনীতির প্ল্যাটফর্ম করে তুলে ফায়দা লুটতে চায়। আর এ ফায়দা লুটার কোনো সুযোগই মোদি সরকার দিবে না বলে বিশ্বাস করি।’
তিনি যোগ করেন, ‘কাশ্মীরকে সব সময়ই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। তাই কাশ্মীরে মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা।’
পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের কারণেই কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ আসলে কী চান তা ভারতবাসীর কানে এসে পৌঁছায় না বলে দাবি করেন তিনি।
৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে মোদি সরকারকে পুরোপুরি সমর্থন জানানোর পর এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মাহমুদ মাদানি।
শুধু আসামেই নয় ভারতের সব রাজ্যে এনআরসি চালু করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটা খুবই জরুরি একটি বিষয়। কত অনুপ্রবেশকারী রয়েছেন তা চিহ্নিত করতে সারা দেশে এনআরসি চালু করা প্রয়োজন। এনআরসি নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে কে ভারতীয় আর কে অভারতীয় তা বেরিয়ে আসবে। এরপর ভারতীয় নাগরিকদের ওপর আর আঙুল তোলা হবে না। তাই এনআরসি হওয়া জরুরি।’
প্রসঙ্গত, ভারতের মুসলিম সংগঠনের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। দেশভাগেরও বিরোধীতা করেছিল এই সংগঠন।
সূত্র: আনন্দবাজার, এএনআই
Leave a reply