কুর্দিদের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লেখা একটি চিঠি ‘ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলেছেন’ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।
গত ৯ই অক্টোবর এরদোগানকে লেখা ওই চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বোকা হবেন না। সিরিয়া থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পর ওয়াশিংটন থেকে আংকারায় চিঠিটি পাঠানো হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে।
এমন একসময় এই চিঠি দেয়া হয়েছে, যখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিরিয়ায় কুর্দিবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে তুর্কি বাহিনী।
চিঠিতে এরদোগানকে ‘ইতিহাসের নিষ্ঠুর’ ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত হওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন ট্রাম্প।
এরদোগানের কার্যালয়ের সূত্র বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান ট্রাম্পের চিঠি পেয়েছেন। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। চিঠিটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পাশে থাকা আবর্জনার স্তুপে ছুড়ে ফেলেন এরদোগান।
সিরিয়ার কুর্দিশ প্রধান অঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে তুর্কিশ অভিযানে সবুজ-সংকেত দিয়েছেন বলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
এরদোগানকে ট্রাম্প বলেন, অভিযান খুব বেশি হয়ে গেলে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেয়া হবে।
তুর্কি সংসদে বিবিসির সূত্রগুলো জানিয়েছে, এরদোগান ঐ চিঠিকে পুরোপুরিভাবে খারিজ করে দিয়েছেন।
এই চিঠি যে দিনটিতে তুরস্কের হাতে পৌঁছায় সেদিনই তুর্কি বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে উত্তর সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
উত্তর সিরিয়া থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পর মি. ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, এই প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে তুরস্কের সেনা অভিযানের প্রতি একটা ‘সবুজ সঙ্কেত’ দেয়া হয়েছে।
এমন একটি ভাষায় চিঠিটি লেখা হয়েছে, যাতে কূটনৈতিক সৌন্দর্য পর্যন্ত রক্ষা করা হয়নি। বরং এক চাঁচাছোলা হুমকির মাধ্যমেই শুরু করেছেন চিঠি।
গেল ৯ অক্টোবর এ চিঠি লেখা হয়। হোয়াইট হাউস থেকে চিঠির সত্যতাও নিশ্চিত করা হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, চলুন, আমরা একটি ভালো চুক্তির জন্য কাজ করি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, হাজার হাজার লোককে হত্যার জন্য আপনি নিশ্চয়ই দায়ী হতে চাইবেন না। আমিও তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংসের জন্য দায়ী হতে চাই না।
‘যদি আপনি এ অভিযান সঠিক ও মানবিক উপায়ে করেন, তবে ইতিহাস আপনাকে ভালো চোখে দেখবে,’ বললেন ট্রাম্প। ‘কিন্তু বিষয়টি যদি ভালোভাবে না হয়, তবে চিরদিনই একজন নিষ্ঠুর ব্যক্তি হিসেবে আপনাকে দেখা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এ নেতা এরদোগানকে আরও বলেন, কুর্দিশ নেতৃত্বাধীন সিরীয় ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসের নেতা মাজলুম আবদির সঙ্গে যদি তিনি বৈঠক করেন, তবে একটি চমৎকার চুক্তি হওয়া অবশ্যই সম্ভব।
তুরস্কে কুর্দিশ পিকেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগসাজশ থাকায় তুরস্কে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে মাজলুম আবদিকে।
‘আপনি একজন কঠোর মানুষ হবেন না, বোকাও হবেন না,’ চিঠির শেষে এমন কথা বলে তিনি আরও যুক্ত করেন, ‘পরে আপনাকে কল দেব।’
Leave a reply