ওয়ার্কার্স পার্টির একাংশের কংগ্রেস বর্জনের ঘোষণা

|

বিভিন্ন অভিযোগ এনে দলের ১০ম কংগ্রেস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির একাংশ। সোমবার, দলটির ৬ কেন্দ্রীয় নেতা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেয়া হয়। একইসাথে দলের নেতাকর্মীদের প্রতিও কংগ্রেস বর্জনের আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি বর্তমানে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে সংস্কারবাদী, সুবিদাবাদী পার্টিতে পরিণত হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্ব রাজনৈতিক দুর্নীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুর্নীতিতে আক্রান্ত, বাস্তবতার নামের বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তির রাজনৈতিক লাইন ও জোটনীতি তথা আওয়ামী লীগের সাথে স্থায়ী ঐক্যের যে নীতি ও কৌশল গ্রহণ করেছে তাতে করে ওয়ার্কার্স পার্টি দেউলিয়া পার্টিতে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা ১০ম কংগ্রেস বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি এবং পার্টির সব কমরেডদের এই প্রহসনের কংগ্রেসে অংশ না নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন ওয়ার্কার্স পার্টির দুই পলিটব্যুরোর সদস্য নুরুল হাসান ও ইকবাল কবির জাহিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাকির হোসেন হবি, মোফাজ্জেল হোসেন মঞ্জু, অনিল বিশ্বাস ও তুষার কান্তি দাস।

এর আগে মতানৈক্যের কারণে গত ২২ অক্টোবর ওয়ার্কার্স পার্টি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস। পরে লিখিত বক্তব্যের জন্য উল্টো তাকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

জানা গেছে, ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে থাকা না-থাকা, গঠনতন্ত্রের নিয়ম উপেক্ষা করে কংগ্রেসকে সামনে রেখে পার্টিতে নতুন সদস্য করা, সম্প্রতি ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় রাশেদ খান মেননের নাম আসা, দলকে পাশ কাটিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদে নিজের স্ত্রী লুৎফুন্নেসা খানকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করাসহ নানা ইস্যু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্য চলে আসছে।

কেন্দ্রীয় কংগ্রেসকে সামনে রেখে এ মতপার্থক্য প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। এছাড়া পার্টির নেতাকর্মীদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ। তাদের অভিযোগ- কমিউনিস্ট আদর্শভিত্তিক পার্টির যে রাজনৈতিক চরিত্র থাকা উচিত রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টি তা থেকে অনেক আগেই দূরে সরে গেছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি, ইউনাইডেট কমিউনিস্ট লীগ ও সাম্যবাদী দল (আলী আব্বাস) মিলে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠিত হয়। ১৯৯৫ সালে পলিটব্যুরোর সদস্য টিপু বিশ্বাস বেরিয়ে নতুন দল গণফ্রন্ট করেন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন বেরিয়ে যান পলিটব্যুরোর আরেক সদস্য সাইফুল হক। বর্তমানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। কংগ্রেসকে সামনে রেখে পার্টি তৃতীয় দফায় ভাঙনের শঙ্কায় ওয়ার্কার্স পার্টি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply