উপাচার্য ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এই অবস্থায় সকলকে সহনশীল আচরণ করার ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
বুধবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, সকলে যেন আরও সহনশীল হয়, ধৈর্য ধারণ করে, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখে। কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেই। অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই তদন্ত করবো এবং তদন্ত করে যথাসম্ভব ব্যবস্থা নেব। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হবে এটা আমরা কখনই কামনা করি না
উপাচার্যের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেগুলো মন্ত্রণালয়কে জানানোর আহ্বান শিক্ষা উপমন্ত্রীর। বলেন, যদি কোনো ধরনের অভিযোগ থাকে, যেজন্য আন্দোলন হচ্ছে, সেগুলো প্রমাণাদিসহ আমাদের সামনে তুলে ধরেন। গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানাতে চাই, কোনো ধরনের অভিযোগ থাকলে সেটা লিখিত আকারে আমাদের জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চায় না উল্লেখ করে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করি না এবং এটার একটা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে। এটা আমরা সমুন্নত রাখার চেষ্টা করি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটা আইনি কাঠামো আছে, সেটা বাইরে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না। কাঠামোর মধ্যেই আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কিছু বক্তব্যের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, তিনি এ শব্দ ব্যবহার করেছেন কিনা সেটার ব্যাপারে আমি অবগত নই। কিন্তু যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে আমরা কোনোভাবেই আনন্দিত নই। আবার, উপাচার্যের বাসভবন ঘিরে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেটা আমরা দেখেছি, সেখানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিরাপত্তাহীনতার কথা বলেছেন। তাই, সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে সেটাই হচ্ছে স্বাভাবিক। এখানে বল প্রয়োগের কোনো বিষয় নেই।
তৃতীয় কোনো শক্তি আন্দোলনকে প্রভাবিত করতে পারে এমন শঙ্কা জানিয়ে তিনি বলেন, যখনই কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, আমরা দেখেছি একটি রাজনৈতিক শক্তি সেটাকে নানা দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা বলছি না সেটা ঘটেছে, কিন্তু সেখানে এসে শঙ্কা আছে আরেকটি তৃতীয় পক্ষ থেকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার।
তিনি বলেন, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়াটা নৈতিক দায়িত্ব। একটি পক্ষ বলেছেন তারা ৮ তারিখে তথ্য-উপাত্ত দেবেন। তবে তার আগেই উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোন ধরনের সহিংসতা আমরা কামনা করি না। সেখানে একশভাগ শতভাগ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি। দুই পক্ষের মধ্যে যখন বাদানুবাদ হয় সেখানে যখন উত্তেজনা সীমা অতিক্রম করে, একে অপরের প্রতি সহিংস আচরণ করে, তখন তো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কিছু কঠিন ব্যবস্থা নিতে হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় আপাতত বন্ধ থাকবে কারণ এই পক্ষ-বিপক্ষের বাইরে তৃতীয় পক্ষ পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য ষড়যন্ত্র করতে পারে, সহিংসতা হতে পারে।
প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে এমন ভাবনা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস বন্ধ করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকবে। এমন পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয় সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
Leave a reply