ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাড়িঘর পাহারা, পরে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে পুলিশ

|

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

চু‌রি যাওয়ার আশঙ্কায় ঘূর্ণিঝড়ের সময় উপকূলের মানুষ নিরাপদ আশ্রয়‌কে‌ন্দ্রে সহ‌জে যে‌তে চায় না। কিন্তু এবার ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আসার আ‌গেই পটুয়াখালী জেলা পু‌লি‌শের পক্ষ থে‌কে স্থানীয়‌দের ঘরবা‌ড়ি পাহারা দেয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা দেয়ার পরই সাধারণ মানুষ বি‌ভিন্ন আশ্রায় কে‌ন্দ্রে চলে যায়। শেল্টা‌রে আশ্রয়‌ নেয়া মানু‌ষের ঘরবা‌ড়ি, গবা‌দিপশু পাহারায় নি‌য়ো‌জিত ছিল পটুয়াখালীর পু‌লিশ।

এদিকে ঝ‌ড়ের পরও পু‌লিশ‌কে দেখা গে‌ছে সাধারণ মানুষ‌দের পা‌শে দাঁড়া‌তে। এমন‌কি ঘূর্ণিঝড় বুলবুল পরবর্তী ভেঙ্গে যাওয়া গাছ অপসারণ, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামত, ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বণ্টনের কাজ করছে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ। রবিবার সকাল থেকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম নেতৃত্বে জেলার সকল উপজেলায় এ কাজ করেছে পুলিশ।

গত দুই‌দিন স‌রেজ‌মি‌নে দেখা গে‌ছে, কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্য‌মিক বিদ্যালয় কে‌ন্দ্রে আশ্রয়‌ নি‌য়েছে রা‌শিদা বেগম। তি‌নি জানান, “পাঁচ‌টি গরু, ২টি ছাগলসহ ঘ‌রে বেশ‌কিছু মুল্যবান মালামাল থাকায় চু‌রির ভ‌য়ে প্রথ‌মে আস‌তে চাই‌নি প‌রে ম‌হিপুর থানার ও‌সি সো‌হেল স্যার এসে বলল যে, এস‌পি স্যা‌রের কড়া নি‌র্দেশ আ‌ছে আপনা‌দের ঘরবা‌ড়ি পাহারাসহ সকল ধর‌নের নিরাপত্তা দেয়ার। ও‌সি স্যা‌রের ওই কথা শু‌নে ম‌নে বল পে‌য়ে‌ছি তাই আশ্রয় কে‌ন্দ্রে আই‌ছি।

জেলার বাউফল উপ‌জেলার চন্দ্রদীপ এলাকার বাসিন্দা অসহায় করিমন ভানু জানান, ঘূর্ণিঝড়েে আমার ঘর ভেঙে পড়ে গেছে। আমার বর্তমানে টাকা নেই। পুলিশ আমার ঘর তুলে দিয়েছে। পু‌লিশ না থাক‌লে আমাদের প‌ক্ষে ভাঙ্গাঘর মেরামত করা সম্ভব ছিলনা।

‌যোগা‌যোগ বি‌চ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী এলাকার বাসিন্দা শ্রী সুশীল চন্দ্র জানান, আমরা চোরের ভয়ে সাইক্লোন শেল্টারে যাইতে চাই নাই। পুলিশ এসে পুলিশ সুপার স্যার নাকি আমাদের নিরাপত্তা দিবে বলছে তাই সাইক্লোন শেল্টার গিয়েছিলাম।

দুমকী উপজেলার বাসিন্দা সিহাব বিশ্বাস জানান, আমাদের রাস্তায় গাছ পড়েছিলো। বেশ কয়েকজন পুলিশ মিলে কাজ কাটতে দেখেছি। তিনি (পুলিশ সুপার) যখন চলে গেলো তখন জানতে পারি স্যার আমাদের পুলিশ সুপার।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম জানান, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করতে আগে থেকেই জেলার প্রতিটি থানায় বিশেষ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল অতিক্রমের সাথে সাথেই পুলিশের টিম কাজ শুরু করেছে।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া গাছ অপসারণ, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামত, ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বণ্টন, সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে পুনরায় নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে হাসপাতালে ভর্তি করা, সড়ক মেরামতসহ বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

দশমিনা এলাকার মোটরসাইকেল চালক রফিক মিয়া জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সড়কের অনেক গাছ উপরে ফেলে। পরে দেখলাম পুলিশ গাছ কেটে সড়কের যান চলাচল সচল করছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply