পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
‘এক লাখ টাকা দিতে হবে তাইলেই সম্মানজনক জায়গায় যেতে পারবা। তাহলে তুমিও সম্মান পাবা। কাউন্সিলে তিন লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে। ওখানে আটটা পিস্তল এসেছে তা ছাড়াও আরো অনেক খরচ হয়েছে। যাই হোক তুমি যদি এক লাখ টাকা দিতে পারো তাহলে তোমাকে কমিটির সম্মানজনক জায়গায় রাখা হবে। টাকা না দিলে তুমি সাধারণ সদস্য পদে থাকবা…।’
স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতার ৬ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের এই অডিও বার্তাটি এখন পটুয়াখালীতে ‘টক অব দা জেলায়’ পরিণত হয়েছে। সেক্রেটারি কর্তৃক দাবিকৃত এক লাখ টাকা না দেয়ার পরেই এই ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায়।
জানা গেছে, ওই উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সহ-সভাপতি পদ প্রত্যাশী মোঃ আবদুল বারেক মুন্সীর কাছে নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল লতিফ মৃধা ফোনে ১ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গত ১২ই নভেম্বর উপজেলার মজিদবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে মোঃ গোলাম সরোয়ার কিচলুকে সভাপতি ও জহির বিএসসিকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং আবদুল লতিফ মৃধাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় আবদুল বারেক মুন্সীকে কোন পদ দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল লতিফ মৃধা। এনিয়ে আবদুল বারেক মুন্সী ও আবদুল লতিদফ মৃধার মধ্যে ৬ মিনিট ১৫ সেকেন্ড মোবাইল ফোনে কথা হয়। সেই অডিও কথা ফাঁস হয়েছে আজ।
অডিও কথোপকথনে ইউনিয়ন সম্মেলনে আগত অতিথিদের আপ্যায়ন এবং ভাড়ায় লোকজন ও পিস্তল সংগ্রহ করতে অনেক খরচ হয়েছে বলে দাবি করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ মৃধা। ফোন আলাপে লতিফ মৃধা বারেক মুন্সীকে বলেন, যদি তুমি কমিটির সম্মানজনক পদে থাকতে চাও তা হলে এক লক্ষ টাকা নিয়ে যোগাযোগ কর। তাহলে তুমিও সম্মান পাবা।
এ ব্যাপারে বারেক মুন্সী জানান, লতিফ মৃধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সম্মানজনক পদ দেওয়ার নাম করে আমার কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় আমাকে কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তাই আমি ফোন আলাপটি ফাঁস করে দিয়েছি। অপরদিকে মজিদবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক মোঃ লতিফ মৃধা বলেন, আসলে আমি টাকার বিষয়টি ওভাবে বলেনি। বারেক মুন্সী নিজেই আমাকে খরচ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সম্মেলনের খরচের টাকা চেয়ে যে কথা বলা হয়েছে তা অন্য কারো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম সরোয়ার কিচলু বলেন, আমি কমিটির পদ নিয়ে টাকা নেয়া ও চাওয়ার ব্যাপারে কিছুই জানি না।
Leave a reply