বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের হত্যার হার তুলনামূলক কমলেও বেড়েছে গ্রেফতার, হয়রানির পরিমাণ।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ৪৯ সাংবাদিক। গত ১৬ বছরে এই সংখ্যা সর্বনিম্ন।
সংবাদকর্মীদের নিয়ে কাজ করা প্যারিসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, গত দুই দশকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৮০ জন সাংবাদিক পেশাগত কাজে নিহত হয়েছেন।
২০১৮ সালেও বিশ্বজুড়ে ৮৭ সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে এসে এই সংখ্যা ৪৪ শতাংশ কমেছে। চলতি বছর নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে ৪৬ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী।
এ বছর মেক্সিকো, সিরিয়া, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সংস্থাটি এই দেশগুলোকেই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বর্তমানে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ফরাসি ভাষায় রিপোর্টার্স সান ফ্রন্টিয়ার্স (আরএসএফ) নামে পরিচিত সংস্থাটি সাংবাদিকদের নিহতের হার কমার কারণও উল্লেখ করেছে। তারা বলছে, গত এক বছরে যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে সাংবাদিকরা কম কাজ করেছেন। সিরিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যারা গেছেন, তাদের প্রস্তুতি ছিল বেশি।
আফগানিস্তানের মতো দেশেও সাংবাদিকরা অনেক বেশি সতর্ক হয়ে কাজ করছেন। একবারে অনেকটা রাস্তা একা পাড়ি দিচ্ছেন না। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর এক দেশ থেকে অন্য দেশে কাজ করতে গিয়ে কার্যত একজন সাংবাদিকেরও মৃত্যু হয়নি। গত এক দশকে যে সংখ্যাটা ছিল চোখে পড়ার মতো।
সংস্থাটি বলছে, মৃত্যুর হার কমলেও দেশে দেশে সাংবাদিকদের ওপর অত্যাচার কমেনি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর সবচেয়ে বেশি সাংবাদিককে বিভিন্ন কারণে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ৩৮৯। এক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আটক সাংবাদিকের সংখ্যা ১২০। শুধু চীন নয়, তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশেও সাংবাদিকদের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে সরকার।
ভারতেও গত কয়েক বছরে এই অভিযোগ বারবার উঠেছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানেও সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেয়ার হার বেড়েছে। পিছিয়ে নেই লাতিন আমেরিকাও। সেখানেও বারবার সাংবাদিকদের কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠছে।
Leave a reply