সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বলেছেন, রাস্তার কোনো শৃঙ্খলা নেই। এলাকায় গেলে গাড়ির গ্লাস নামাতে পারেন না, লজ্জায় মুখ লুকাতে হয়। অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীও। বলেন, সড়ক ব্যবস্থায় দিন দিন বিশ্ব এগিয়ে গেলেও বাংলাদেশের উন্নতি নেই। এই অবস্থায় চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন সঠিকভাবে শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো প্রকল্প নেয়া যাবে না বলেন জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশে সড়ক পথেই যাতায়াত করে দেশের বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু মানের বিচারে এদেশের সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের হিসেবে, ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২১-তম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘মহাসড়কের লাইফ টাইম চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ নিয়ে বৈঠকে সড়ক-মহাসড়কে বেহাল দশার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অধিদপ্তরের অপচয়, অনিয়ম আর অদক্ষতাকে দায়ী করা হয়। বলা হয়, মাত্রাতিরিক্ত ওজনে পণ্য পরিবহনে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি।
কিন্তু, এমন যুক্তির সঙ্গে দ্বিমত করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। অর্থমন্ত্রীও প্রশ্ন তোলেন, সঠিকভাবে রক্ষাণাবেক্ষণ না হওয়া নিয়ে। বলেন, সড়কের অবস্থা ভালো না থাকায় জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারেন না। এলাকার লোকজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গালি দেয়। সড়কের কারণে এলাকায় গিয়ে গাড়ির গ্লাস খুলে জনগণের সঙ্গে কথা বলতে পারি না, লজ্জা লাগে।
মন্ত্রী বলেন, শুধু নতুন রাস্তা তৈরির জন্য বহু প্রকল্প নেওয়া হয়। অথচ রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেওয়া হয় না। সড়কের অবস্থা খারাপ। সড়ক সংস্কারের টাকাও আমরা দিচ্ছি। তারপরও বেহালদশা কেন। আমরা কি সারাজীবন রাস্তার পেছনে বসে থাকবো। যে সব রাস্তা করেছেন সেগুলো শেষ করেন। পরে আবারও নতুন রাস্তা করবেন। রাস্তা ভেঙে গেলে কেন সংস্কার করা হচ্ছে না। অনেক ঠিকাদার এমনভাবে রাস্তা নির্মাণ করেন এটা ভাঙবেই।
তিনি বলেন, বিটুমিন সড়ক দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এর বদলে কংক্রিট নিয়ে আসতে হবে- প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বারবার তাগিদ দিয়েছেন। আমাদের জনগণ অনেক শক্তিশালী। তাদের চাহিদা প্রাধান্য দিয়েই কাজ করতে হবে। অনেক দেশি কোম্পানিও ভালো ভালো কাজ করছে। অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, তারপরও শুধু তারাই কাজ পায়। এদের কারণে বিদেশি ভালো প্রতিষ্ঠানও কাজ পায় না।
তিনি বলেন, আমি অনুরোধ করবো আপানারা এই কাজগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেন। রাস্তার লাইফটাইম হচ্ছে ৫০ বছর। তৈরির প্রথম দশ বছর কিছুই করা লাগবে না। দশ বছর পর ৫ শতাংশ এগ্রি গ্যাস মেশাবে, এর ফলে আরও দশ বছর চলবে। এভাবে প্রতি ১০ বছর পর পর এগ্রি গ্যাস মেশালেই এর লাইফটাইম ৫০ বছর হবে।
টোল আদায়ের কারণে দীর্ঘ যানজট হওয়ায় স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা দ্রুত চালুর নির্দেশনাও দেয়া হয় বৈঠকে।
Leave a reply