আহমেদ নাসিম আনসারী, ঝিনাইদহঃ
সন্ধ্যা হলেই গাড়ি চালক আর বাসের যাত্রীদের বাড়তি চিন্তা। কখন তারা পার হবেন আলোচিত ব্রিজটি। কেননা একটু রাত হলেই দক্ষিণবঙ্গের মালবাহী হাজার হাজার ট্রাকের চাপে অন্ধকারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকবে ভয়াবহ যানজট। তখন আর রক্ষা নেই। অপেক্ষা করতে হবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এখান থেকে বের হওয়ার বিকল্প পথও নেই। ফলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে দুর্বিসহ সময় কাটাতে হবে গাড়ির লোকজন আর দূরপাল্লার যাত্রীদের। এমন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে খুলনা-কুষ্টিয়া ব্যস্ততম মহাসড়কের ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের নির্মাণাধীন ছালাভরা ব্রিজটি ঘিরে।
হাইওয়ে প্রশাসন, পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের ভাষ্য, দীর্ঘদিনের ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি নির্মাণের কাজ চলছে। যানজটমুক্ত মহাসড়কের জন্য এ ব্রিজটির পাশেই বিকল্প বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা দরকার ছিল। কিন্ত তা না করে সরু বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। যে কারণে যানজট নিত্যসঙ্গী হয়েছে।
তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্মাণাধীন ব্রিজটির দুই পাশেই খাল। যে খালের গভীরতা ২৮/৩০ ফুটেরও অধিক। ফলে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে নির্মাণাধীন ব্রিজের ওপরই সরু বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্রিজের ওপর দিয়েই চলছে সব যানবাহন। যদিও ব্রিজটির একপাশের গাড়ি ছাড়লে অন্যপাশে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। এছাড়া যানবাহনের কিছু চালক আছে তারা নিয়ম ভঙ্গ করে বিশৃংখলভাবে লাইন ছেড়ে আগে ওঠার চেষ্টা করছে। এতে যানজট আরও বেড়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে এ মহাসড়কে গেলে দেখা যায়, কালীগঞ্জের ছালাভরা নির্মাণাধীন ব্রিজের দুইধারে সারিবদ্ধ যানবাহনের প্রায় ১৫ কিলোমিটারের লম্বা লাইন। যে লাইনে সন্ধ্যার পর থেকে শত শত যাত্রীবাহী বাসসহ মালবাহী ট্রাক ছোট বড় গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। তারা ব্রিজের দু’ধারে অপেক্ষায় আছে বেইলী ব্রীজ পার হওয়ার জন্য। আর ঢাকা চট্রগ্রামসহ দূরপাল্লার গাড়িগুলোর যাত্রীরা প্রচণ্ড শীতের মধ্যে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন।
গড়াই পরিবহনের আবুল কালাম নামের এক বাস চালক জানান, তারা সকালে কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে খুলনায় গিয়েছিলেন। এরপর বিকালে খুলনা থেকে ফিরতি টিপে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্ত মহাসড়কের কালীগঞ্জের ছালাভরা ব্রিজের জন্য ভয়াবহ যানজটের শিকার হয়ে রাস্তায় পড়ে আছেন। তিনি বলেন, এমন অবস্থা প্রায় দিনই ঘটছে।
জেলার মহেশপুরের সাইদুর রহমান নামের ঢাকা পরিবহনের যাত্রী জানান, বিকালের গাড়িতে ঢাকায় যাচ্ছেন। সকালে ঢাকায় গিয়ে অফিস ধরবেন। কিন্ত কালীঞ্জের ছালাভরা ব্রিজের আগে গাড়ির লম্বা লাইনের যানজটে আটকে গেছেন।
হাইওয়ে পুলিশের এস আই কালীপদ বিশ্বাস যানজটের কথাটি স্বীকার করে জানান, নির্মাণাধীন ব্রিজটি ঘিরেই মূলত যানজট। যা প্রায় প্রতি রাতেই দেখা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপদের উপ প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার জানান, মহাসড়কের অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ কালীগঞ্জের ছালাভরা ব্রিজটির নির্মাণ কাজ চলছে। ব্যস্ততম এ মহাসড়কের ওপরের ব্রিজটি নির্মাণের আগে দুই ধারে বাইপাস সড়কের প্রয়োজন ছিল এটা সত্য। কিন্ত নির্মাণাধীন ব্রিজটির দুই পাশেই কমপক্ষে ৩০ ফুট গভীরের খাল। যে কারণে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সরু হলেও বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।
Leave a reply