এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দিয়েছেন আদালত।
প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া দেশব্যাপী ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ বাদী হয়ে মামলা করেন।
প্রশান্ত কুমার হালদার ছাড়াও যাদের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন- কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নুরুল আলম, পরিচালক জহিরুল আলম, এমএ হাশেম, নাসিম আনোয়ার, বাসুদেব ব্যানার্জী, পাপিয়া ব্যানার্জী, মোমতাজ বেগম, নওশেরুল ইসলাম, আনোয়ারুল কবির, প্রকৌশলী নূরুজ্জামান, আবুল হাশেম, মো. রাশেদুল হক, পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, স্ত্রী সুস্মিতা সাহা, ভাই প্রিতুষ কুমার হালদার, চাচাতো ভাই অমিতাব অধিকারী, অভিজিৎ অধিকারী, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক পরিচালক ইরফান উদ্দিন আহমেদ, পি কে হালদারের বন্ধু উজ্জ্বল কুমার নন্দী।
দুইজন বিনিয়োগকারীর টাকা ফেরত চেয়ে করা মামলার শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ হাশেমসহ কোম্পানির পরিচালকদের সম্পদের হিসাব দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হল, যেন এ ব্যক্তিরা কোনোভাবেই দেশ ছাড়তে না পারেন। স্বরাষ্ট্র সচিবকে এ নির্দেশ দেয়া হল। এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতেও বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের নগদ অর্থ, গাড়ি, মজুদসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কোনো ব্যক্তি বা সত্তার কাছে হস্তান্তর না করতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল প্রিন্স আল মাসুদ। তিনি যুগান্তরকে আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন। তিনি প্রথমে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স এবং পরে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে− ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) প্রভৃতি।
Leave a reply