হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন সাংবাদিক জুয়েল চৌধুরী। এ ঘটনায় জরুরী প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছে জেলা প্রেসক্লাব। আহত সাংবাদিককে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা শহরের বেবিস্ট্যান্ড এলাকায় নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত হবিগঞ্জ জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কালামের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। সাংবাদিক জুয়েল চৌধুরী হবিগঞ্জে দৈনিক খোয়াইসহ একটি জাতীয় দৈনিকে কর্মরত রয়েছেন।
আহত জুয়েল জানান, রবিবার বিকেলে বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় জজ কোর্টের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় অ্যাডভোকেট কালামসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। প্রায় ৩ মিনিট ধরে সন্ত্রাসীদের পিটুনীতে তার হাত, মুখ ও পায়ের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে জুয়েলকে দেখতে যান হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ ইসমাইল হোসেন, সাবেক সভাপতি শামীম আহছানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রানিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ দেবাশীষ দাশ জানান, আহত সাংবাদিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে। বর্তমানে সার্বিকভাবে তার অবস্থা স্থিতিশীল।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাসুক আলী জানান, হামলার বিষয়টি জানতে পরেছি। আহত সাংবাদিককে আমি হাসপাতালে দেখে এসেছি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, সাংবাদিক জুয়েলের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জেলা প্রেসক্লাবে সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় জরুরী সভার আহ্বান করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, হামলাকারী অ্যাডভোকেট কালাম শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর বারোটায় বন্ধের দিনে আদালতের ভবনে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হিসেবে পাওয়া তার সরকারি কার্যালয়ে এক নারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নূরুল হুদা চৌধুরী তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এ সময় বিচারকের প্রশ্নের সদোত্তর না দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে সটকে পড়েন কালাম। বিচারকের নির্দেশে একইদিন রাত দশটায় হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওইদিনই তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরে সরকারি এপিপি’র পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এপিপি কালাম। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।
Leave a reply