কুড়িগ্রামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে সাংবাদিককে কারাদণ্ড, নির্যাতনের অভিযোগ

|

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে টাস্কফোর্সের মাদক বিরোধী অভিযানে আরিফুল ইসলাম নামে এক সংবাদকর্মীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার দাবি, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে টাস্কফোর্সের মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের চড়ুয়াপাড়ার বাসায়। জব্দ করা হয় দেশীয় মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা। পরে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে।

তবে, পরিবারের দাবি, তাকে মাদক মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু জানান, শুক্রবার গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল বাসায় প্রবেশ করে আরিফুল ইসলামকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। কি অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে তখন তারা জানাননি।
মধ্যরাতে তাকে বাসা থেকে জোর করে তুলে আনার পথে জেলা প্রশাসক কার্যালয় পর্যন্ত লাথি-থাপ্পড়, ঘুষি মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয় জেলা প্রশাসকের সাথে। তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। আরিফুল অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

বিবিসিকে যা বললেন জেলা প্রশাসক:

সাংবাদিক আরিফুলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কারাদণ্ড দেয়ার বিষয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন। তিনি বলেন, আমাদের নিয়মিত মোবাইল কোর্ট হয়, আমরা শিডিউল করে দেই। অনেক সময় তারা মাদক, চোরাচালানের টাস্কফোর্সের অভিযানেও যায়, যেখানে ম্যাজিস্ট্রেট থাকেন। গত রাতেও এরকম কয়েকটি অভিযান চালানো হয়েছে। সেই অভিযানে ওই ব্যক্তিকে আটক করে সাজা দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ কারণে এই অভিযান বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি ওই ঘটনাই হতো, সেটা তো একবছর আগের কথা। এখানে আমি কিছু কাজ করেছি, সংস্কার কাজ.. সেখানে ওরা বলছে যে, আমার নামে….নামের কোন লক্ষণই নেই, সেটা আলাদা বিষয়, সেখানে সে স্যরি বলেছে বলে আমরা তো আর কিছুই বলি নাই। ওইটা যদি কোন বিষয় হতো, তাহলে তো তখনি আমরা কোন অ্যাকশনে যেতাম।

মোবাইল কোর্ট এভাবে অভিযান চালাতে পারে কিনা, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আসলে অভিযানটি চালিয়েছে টাস্কফোর্স। সেখানে যদি মোবাইল কোর্টে শিডিউলভুক্ত মামলার বিষয় থাকে, সেক্ষেত্রে তারা দিতে পারে।

রাতের ওই অভিযানে আর কাউকে সাজা দেয়া হয়নি বলেও তিনি জানান।

তাহলে কি শুধুমাত্র একজনকে লক্ষ্য করেই অভিযান চালানো হয়েছে এবং তাকেই সাজা দেয়া হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয় কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বিবিসিকে জানান আমার কাছে তা মনে হচ্ছে না। তবে আমার মনে হয় রেগুলার মামলা হলে ভালো হতো।

এ ধরনের অভিযানের ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না বলে বিবিসি বাংলাকে জানান কুড়িগ্রাম থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply