ফেনীতে করোনা প্রস্তুতি কাগজে-কলমে: ট্রমা সেন্টারের মূল ফটকে তালা

|

ফেনী প্রতিনিধি:

ফেনীর মহিপালের ট্রমা সেন্টার দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর এই হাসপাতালটিকে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করার ঘোষণা দিয়েছেন ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেন।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে মহিপাল ট্রমা সেন্টারে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, মূল ফটকে তালা লাগানো। সামনে বেশ কিছু সিএনজি অটোরিকশা দাঁড়ানো। দেখে মনে হয়নি এটি রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, সকাল বেলা খুলতে দেখি। দুপুরের দিকে আবার তালা লাগিয়ে চলে যায়। করোনা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে জানতে মানুষ ভিতরে ঢোকার সুযোগ নাই, কীভাবে সেবা নিবে?

ফেনী জেনারেল হাসপাতালসহ জেলায় ১’শ ৫ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হলেও করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় কোনো সরঞ্জাম নেই। ‘আইসোলেশন ইউনিট’ ঘোষণা করলেও চিকিৎসক-নার্স কারোরই প্রশিক্ষণ নেই। এরইমধ্যে জনবল ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য মহিপাল ট্রমা সেন্টারে ৩০ শয্যার প্রস্তুত করা হলেও দেখা গেছে মূল ফটকে তালা দেয়া। স্থানীয়রা জানিয়েছে এটি কাগজে-কলমে প্রস্তুত করা হয়েছে মাত্র। আর সদর হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, দুইজন ডাক্তার প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য ঢাকা রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস চিকিৎসায় ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ খোলা ছাড়া আর কোনো প্রস্তুতি দেখা যায়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় তাদের মধ্যে রোগীদের সেবা দেওয়া নিয়ে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সূত্র আরও জানায়, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ১২ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেন। প্রতিটি আইসোলেশন ওয়ার্ড ঘিরে একটি কমিটি করা হয়েছে। জেলার সর্বাধিক শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ৩০ শয্যার ওয়ার্ড হয়েছে। রোগীদের সেবা দিতে চিকিৎসক, নার্স, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ অর্ধশতাধিক নিযুক্ত করা হয়েছে।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. ইকবাল হোসেন জানান, মহিপাল ট্রমা সেন্টারে ৩০ শয্যা, সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ শয্যা, জেলার অপর ৫ উপজেলা সোনাগাজী, ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ শয্যা করে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিতে দুইজন ডাক্তার ঢাকা রয়েছেন।

আইসোলেশন ইউনিটে আসা রোগীদের আইডিসিআর-এর নির্দেশনামতে চিকিৎসা দেয়া হবে। হাসপাতালের ওয়ার্ড প্রস্তুত রয়েছে। তবে শনাক্তকরণ কোনো যন্ত্রপাতি নেই। এ বিষয়ে জানতে ফেনীর সিভিল সার্জন সাজ্জাদ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply