করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতে নাগরিকদের চলাফেরায় ডিজিটাল নজরদারি ও স্মার্টফোন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে অনেক দেশে। করোনা আক্রান্ত রোগী খুঁজে বের করতে ফোন ট্র্যাক করছে অনেক দেশের সরকার। কোনো কোনো দেশে ফোন লোকেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ ও ক্রেডিট কার্ড কার্ড রেকর্ডও যাচাই করছে কেউ কেউ। কেউ আবার ব্যবহার করছে নাগরিকের স্মার্টফোনের তথ্য-উপাত্ত।
চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এমনকি ইউরোপের দেশগুলোতেও ব্যাপকভাবে চলছে এই ইলেক্ট্রনিক নজরদারি। এমন তথ্য জানিয়েছেন ফোর্বস, নিউইয়র্ক টাইমসসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। করোনাবিরোধী যুদ্ধে ডিজিটাল মনিটরিংকে কার্যকর দাবি করছে সরকারগুলো।
শুরু থেকেই সম্ভাব্য সব ধরনের অস্ত্র কাজে লাগিয়েছে চীন। এক্ষেত্রে কিছু অঞ্চলে ফোন ট্র্যাকিং বেশ কার্যকর বলে দাবি করেছে দেশটির সরকার।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তরা কোথায় কোথায় গেলেন, কার কার সংস্পর্শে এলেন, সেটি নির্ণয় করা গেলে রোগের বিস্তার ঠেকানো সহজ হয়ে যায়। তাই, সর্বাত্মকভাবে করোনা দমনে এইসব প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজ, স্মার্টফোনের লোকেশন সংক্রান্ত ডাটা, ক্রেডিট কার্ডে ক্রয়ের রেকর্ড জড়ো করেছে মুন জায়ে-ইনের সরকার।
ইতালিতে নাগরিকদের মোবাইল ফোন থেকে উৎসারিত লোকেশন সংক্রান্ত ডাটা বিশ্লেষণ করছে কর্তৃপক্ষ। উদ্দেশ্য, মানুষজন সরকারের লকডাউন নির্দেশ মেনে চলছে কিনা, তা পরখ করে দেখা। পাশাপাশি প্রতিদিন চলাচলের ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে।
সরকার সম্প্রতি এই ডাটা বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষই দূরত্ব বজায় রেখে হাঁটাচলা করছে না। এএফপি জানিয়েছে, ইসরাইলে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের বহু পুরনো লোকেশন ডাটা ব্যবহার করা শুরু করছে। তাদের উদ্দেশ্য, নাগরিকরা নিজের অজান্তেই ভাইরাসের সংস্পর্শে চলে এসেছেন, তা নির্ণয় করা। তবে লোকেশন ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছিল সন্ত্রাস প্রতিরোধে ব্যবহারের কথা বলে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে মহামারি শনাক্তে কোটি কোটি নাগরিকের স্মার্টফোনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এই তথ্য নিয়ে ডেটাবেস তৈরি করা হচ্ছে। ডেটাবেসে রয়েছে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির বাড়ির ঠিকানা ও এলাকা।
Leave a reply