জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস করোনাভাইরাসকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ‘সবচেয়ে বড় সংকট’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এ সংকট এমন মন্দা নিয়ে আসতে পারে, সম্ভবত যার সমান্তরাল নজির সাম্প্রতিক ইতিহাসে নেই।
মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সম্ভাব্য আর্থ-সামাজিক প্রভাব নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশকালে তিনি এ কথা। গুতেরেস বলেন, করোনাভাইরাস সমাজগুলোর মর্মমূলে আঘাত হানছে, মানুষের জীবন ও জীবিকা কেড়ে নিচ্ছে। জাতিসংঘ গঠিত হওয়ার পর থেকে কোভিড-১৯ আমাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখে ফেলেছে।
সংক্রমণ রোধ করতে ও মহামারীর ইতি ঘটাতে আশু সমন্বিত স্বাস্থ্য উদ্যোগ নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতি স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সাহায্য করার আর্জি জানিয়েছেন গুতেরেস, না হলে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া রোগটির দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এই রোগ ও এর আর্থিক প্রভাবের মিলিত কারণে বাড়বে অস্থিরতা, দ্বন্দ্ব। গোটা বিশ্ব যাতে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে জোরালোভাবে রুখে দাঁড়ায়, সেই চেষ্টাই করতে হবে। তার মতে, রাজনীতি ভুলে সবাই একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে তবেই সাফল্য আসবে। গুতেরেস বলেন, আমরা একটা নিদারুণ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। গত ৭৫ বছরে এমন স্বাস্থ্য সংকটে পড়তে হয়নি, যেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে; মানুষের দুর্দশা বাড়ছে। এটা স্বাস্থ্য সংকটের থেকেও বেশি মানব সংকট।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বজুড়ে আড়াই কোটি কর্মসংস্থান নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী বিদেশি বিনিয়োগের ধারায় ৪০ শতাংশ ‘অবনমন’ হতে পারে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় কোভিড-১৯ রোগের বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সকালে যে হালনাগাদ তথ্য দিয়েছে, তাতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন আট লাখ ৭০ হাজারের কাছাকাছি আছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
Leave a reply