মার্কিন তেল অর্থনীতি ভয়ঙ্কর এক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। করোনাভাইরাস মহামারিতে তেলের চাহিদা এতটাই পড়ে গেছে যে, ব্যারেল ব্যারেল তেল গুদামজাত করার জায়গাও ফুরিয়ে গেছে।
রয়টার্স ও সিএনএনের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে। তেলের দামের এই নেতিবাচক প্রভাবে শত শত মার্কিন তেল কোম্পানিগুলো দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
ঠিক একই সময়ে বিশ্ববাজারে তেলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে রাশিয়া ও সৌদি আরব।
এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় তেলের দাম এতটাই তলানিতে নেমে গেছে যে, মার্কিন তেল কোম্পানিগুলো কোনো আয় করতে পারছে না।
১৯৮৩ সালে ব্যবসা শুরু করে এনওয়াইএমইএক্স অয়েল ফিউচার। কিন্তু সোমবারের মতো পরিস্থিতিতে এর আগে কখনও পড়তে হয়নি তাদের। কাজেই ইতিহাসের পাতায় এ ঘটনা রেকর্ড হয়ে থাকল।
এখন মূল চিন্তার বিষয় যে, তেলের দাম কতদিন এভাবে পড়তির দিকে থাকে। দ্রুত দাম বেড়ে গেলে বহু মার্কিন কোম্পানি দেউলিয়াত্বের কবল থেকে রক্ষা পাবে।
হাউসটনের আইনি প্রতিষ্ঠান হায়নেস অ্যান্ড বুনের এনার্জি প্র্যাকটিসের কো-চেয়ারম্যান আইনজীবী বুডি ক্লার্ক বলেন, সম্ভাব্য তেল দেউলিয়াত্ব থেকে রক্ষা পেতে তার ফার্ম মারাত্মকভাবে ব্যস্ত।
তিনি বলেন, আমার জীবনে কখনও এমন দৃশ্যপট দেখিনি। এটি নজিরবিহীন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সোমবার নজিরবিহীন এই পরিস্থিতির মধ্যে যখন বাজার শেষ হলো, তখন ফিউচার মার্কেটে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের শীর্ষ ব্র্যান্ড ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের প্রতি ব্যারেলের দাম ছিল মাইনাস ৩৭.৬৩ ডলার।
যার অর্থ দাঁড়িয়েছে– এখন তেল নিলে ক্রেতাকে উল্টো টাকা দিতেও রাজি উৎপাদকরা। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে, চাহিদা না থাকায় ও উৎপাদন অব্যাহত থাকায় মে মাসেই তেল মজুদের আর জায়গা থাকবে না।
লকডাউনে বিশ্বের বহুদেশের মানুষ এখন ঘরবন্দি। রাস্তাঘাট সব ফাঁকা, অলস বসে আছে উড়োজাহাজগুলো। আর অন্ধকার হয়ে পড়েছে কারখানাগুলো।
কাজেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের চাহিদা গত তিন মাস ধরে ক্রমাগত কমেই যাচ্ছিল। কিন্তু উৎপাদন বন্ধ না থাকায় বিক্রি না হওয়া কোটি কোটি ব্যারেল তেল গুদামজাত করার জায়গাও শেষ হয়ে আসছিল।
আশঙ্কা করা হচ্ছিল, মে মাসের আগেই গুদাম, শোধনাগার, টার্মিনাল, জাহাজ, পাইপলাইন, সবগুলোর ধারণক্ষমতা পূর্ণ হয়ে যাবে।
বিবিসি জানায়, আর এই আতঙ্কই যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদিত তেলের দাম শূন্যের নিচে নিয়ে গেছে।
Leave a reply