করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর পুরোপুরি সেরে উঠতে একজন মানুষের কতদিন সময় লাগে, এই প্রশ্ন এখন অনেকের মনে।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদন বলছে, একজন রোগীর সুস্থ হতে কত সময় লাগবে তা নির্ভর করে ভাইরাসের সংক্রমণে তার শরীর কতটা কাবু হচ্ছে তার ওপর। অনেক রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। আবার কিছু রোগীর অনেক ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে, যা দীর্ঘদিন পর্যন্ত হতে পারে। মূলত বয়স, লিঙ্গ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত জটিলতাও করোনা রোগের গভীর প্রভাব রাখে।
উপসর্গ মৃদু হলে
মৃদু অসুস্থ রোগীরা দ্রুত ও ভালোভাবেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের বিভিন্ন উপসর্গ বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকাংশের ক্ষেত্রে কাশি ও জ্বরের মতো সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। তবে অনেকের গায়ে ব্যথা, ক্লান্তি, গলাব্যথা বা মাথাব্যথাও হতে পারে।
এ ছাড়া শুরুতে শুকনো কাশি হতে পারে। তবে শ্বাসতন্ত্রে ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকলে কাশির সঙ্গে ফুসফুসের মরা কোষও বেরিয়ে আসতে পারে। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে বিশ্রাম নেয়া ও প্রচুর পানি এবং তরল খাবার খেতে হবে। ব্যথা কমাতে ওষুধ হিসেবে প্যারাসিটামলও দেয়া যেতে পারে।
উপসর্গ মৃদু হলে সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যেই জ্বর কমে যায়, তবে কফ থাকতে পারে আরও কিছু দিন। চীনা রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে সেখানে রোগীদের সেরে উঠতে গড়ে দুই সপ্তাহের মতো সময় লেগেছে।
গুরুতর অসুস্থ হলে
গুরুতর অসুস্থ হলে সংক্রমণের পর সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। এ সময় শ্বাস-প্রশ্বাসে জটিলতা দেখা দিতে পারে এবং ফুসফুসে পানি জমতে পারে। তখন শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে অনেক রোগীকে অক্সিজেন দেয়া হয়।
ব্রিটিশ চিকিৎসক সারাহ জারভিস বলেন, ‘শ্বাসকষ্টের জটিলতা সারতে একটু সময় লাগতে পারে। এ ধরনের রোগীর ধকল কাটিয়ে উঠতে দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।’
রোগী আইসিইউতে থাকলে
এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতি ২০ জনে একজন রোগীকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এ সময় রোগীর শ্বাস-প্রশাস স্বাভাবিক রাখতে ভেন্টিলেটরও ব্যবহার করতে হতে পারে।
ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যালিসন পিটটার্ড বলেন, ‘আইসিইউ থেকে ছাড়া পেলেও শরীরের পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পেতে ১২-১৮ মাস সময় লেগে যেতে পারে।’
Leave a reply