নায়করাজ রাজ্জাক। বাংলা চলচ্চিত্রের অনন্য এক অধ্যায়ের নাম। ষাট থেকে নব্বইয়ের দশকের শেষ পর্যন্ত বাংলা সিনেমার সবচেয়ে শক্তিশালী অভিনেতা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে সামাজিক সংকট, প্রেম-ভালোবাসার ছবি সবখানেই তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন এই কিংবদন্তী। স্বভাবতই, তাঁর মৃত্যুতে শোকে কাতর বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীরা।
‘আমি কার জন্য পথ চেয়ে রইবো, আমার কি দায় পড়েছে?’ বাংলা চলচ্চিত্রের বহু জনপ্রিয় একটি গান যার দৃশ্যায়নে ছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক।
এখন আর কারো জন্যই পথ চেয়ে থাকবেন না তিনি। বরং নীল আকাশের নিচে সত্যি সত্যি একাকী পথ চললেন তিনি।
চলচ্চিত্র শিল্পের অস্থিরতার ডামাডোলে খানিকটা অভিমান নিয়েই হয়তো চলে যাওয়া রাজ্জাকের। ভালো কিছুর প্রত্যাশায় অভিমান করাটাও তাঁকেই মানায়। তিনি যে নায়করাজ। টানা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা চলচ্চিত্রকে, বাঙালির মননকে সমৃদ্ধ করেছেন রাজ্জাক।
অভিনয়ের শুরু ষাটের দশকের মাঝামাঝি। প্রথম চলচ্চিত্র ‘বেহুলা’ দিয়েই বাজিমাত করেছিলেন তিনি। তারপরের গল্প, কেবলি এগিয়ে যাওয়ার। চলচ্চিত্রকে জনপ্রিয় করার। দর্শককে হলমুখী করারও অনবদ্য কারিগর ছিলেন রাজ্জাক। বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন মুক্তিযুদ্ধ আর ভাষা আন্দোলনকে প্রাণবন্তভাবে দর্শকদের কাছে তুলে ধরেছিলেন শক্তিমান এই অভিনেতা।
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি বাংলা চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার প্রভাব দারুণ ব্যথিত করেছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার বিজয়ী নায়করাজকে। সেই অভিমানেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করা জনপ্রিয় এই অভিনেতা। যাপিত জীবনে দারুণ আমুদে, হাসিখুশি রাজ্জাক পরিচালনা করেছেন অনেকগুলো সিনেমা। দুই ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাট হাঁটছেন বাবার দেখানো পথ ধরেই।
আব্দুর রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ৭৫ বছর বয়সে এসে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন তিনি। যদিও অভিনয় আর কর্মগুণে তিনি বেঁচে থাকবেন বহুকাল, বাঙালির-বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে। শ্রদ্ধা নায়করাজ রাজ্জাক।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply