ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে ৯ যুবক ফিরেছেন নিজেদের গ্রামে। কিন্তু করোনা ছড়াতে পারে এ আশঙ্কায় বাড়িতে ঢোকেননি তারা।
এলাকার কালিন্দ্রী নদীর তীরের আমবাগানে নিজেরাই তৈরি করেছেন ‘কোয়ারেন্টাইন’ শিবির। ত্রিপলের ছাউনি দেয়া অস্থায়ী সেই শিবিরে পরিবার, গ্রামবাসীর থেকে দূরে দিন কাটাচ্ছেন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের কোতোয়ালির ৯ শ্রমিক।
তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন গ্রামবাসী ও স্থানীয় ক্লাব। স্বেচ্ছায় ‘বনবাসে’ থাকা শ্রমিকদের দু’বেলা খাবারের জোগাড় করছেন তারাই।
হাওড়ায় শ্রমিকের কাজ করতেন সতীচড়া গ্রামের ওই ৯ জন। লকডাউনে কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন তারা। হাওড়ায়ও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। পকেটে টাকা ফুরিয়ে গেলে যোগাযোগ করেছিলেন ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের সঙ্গে।
২৫ এপ্রিল নীহারেরই উদ্যোগে হাওড়া থেকে গ্রামে ফেরেন চিন্টু হালদার, সিন্টু হালদাররা। মালদহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে তারা স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন থাকার পরামর্শ দেয়।
বাড়িতে আছেই দু’একটা ঘর। সেখানে হোম কোয়ারেন্টাইন নিয়ম মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই বাড়িতে না ঢুকে কালিন্দ্রী নদীর ধারে আমবাগানে তাঁবু গেড়েছেন সিন্টুরা।
বাঁশ, ত্রিপল দিয়ে তৈরি করেন ছাউনি। গ্রামবাসী প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য চৌকি ও মশারির ব্যবস্থা করে দেন। রান্নার জন্য দেয়া হয় গ্যাস ও ওভেনও। দেয়া হয় খাদ্যসামগ্রীও।
সিন্টু বলেন, পরিবার, গ্রামের মানুষের কথা ভেবে স্বেচ্ছায় বাগানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আরও সপ্তাহখানেক থাকার পর ফের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে বাড়ি ফিরব।
গ্রামবাসী নীলকমল সরকার ও বাপি হালদাররা বলেন, অনেক গ্রামে রাতের অন্ধকারে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়িতে ঢুকছেন। বাঁশের ব্যারিকেড দিতে হচ্ছে। আমাদের গ্রামের শ্রমিকরা নিজেরাই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বাগানে থাকছেন।
নীহাররঞ্জন বলেন, ওই যুবকদের সচেতনতা সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে সরকারি কোয়ারেন্টিনে রাখার বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a reply