সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডা. তৈয়েবুর রহমান গালিবকে মারধর করেছে এক ঔষধের দোকানী। এতে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে গোটা হাসপাতালের স্টাফদের মাঝে। এক রোগীর জন্য দেওয়া ঔষধ পাল্টে দিতে বলায় ডাক্তারের উপর এ ঘটনা ঘটে।
হামলাকারী মনিরুল সরদার হাসপাতালের সামনে এস.এম ড্রাগ হাউজের মালিক ও স্থানীয় হান্নান সরদারের ছেলে।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: তৈয়েবুর রহমান গালিব জানান, হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক রোগীর জন্য ব্যবস্থাপত্র দেখে নার্স জরুরি কিছু ঔষধ আনতে পাঠান রোগীর স্বজনকে। রোগীর স্বজনও ঔষধ নিয়ে ওয়ার্ডে ফেরেন। নার্স দেখলেন, এক ওষধের পরিবর্তে অন্য ঔষধ দিয়েছে দোকানি। নার্স ঔষধটা বদলে আনতে বললেন। রোগীর স্বজনও পুনরায় দোকানে গিয়ে ঔষধ বদলাতে ব্যর্থ হয়ে ভারাক্রান্ত মন দিয়ে জরুরি বিভাগে ঘটনাটি জানায়।
তিনি বলেন, ওই লোকটি দেখে খুব অসহায় ও গরিব পরিবারের মনে হয়। ঘটনাটি আমাকে জানালে, আমি পুনরায় ওই দোকানে তাকে ঔষধটি বদলে আনতে পাঠাই। অসহায় মানুষটি ফিরে এসে জানায়, ঔষধ বদলে দিবে না আবার টাকাও ফেরৎ দিবে না। রোগীর স্বজনের কাছে টাকাও নেই। তখন অসহায় মানুষটির দিকে তাকিয়ে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোগীর স্বজনের সঙ্গে আমিও দোকানে গিয়ে ঔষধটি বদলে দিতে অনুরোধ করি। তখন ঔষধের দোকানদার মনিরুল সরদার ঔষধ বদলে দিতে অস্বকৃতি জানিয়ে বলে, ওই ঔষধ আমার এখানে নেই। তখন টাকা ফেরত চাই। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর হামলা চালায় ওষধের দোকানি মনিরুল সরদার। ঘটনাটি আমি সিভিল সার্জন স্যারকে অবহিত করে এ ঘটনার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছি।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সাইফুল্লাহ্ আল কাফি জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে কর্তৃপক্ষ আশস্ত করেছেন।
তবে হামলাকারী মনিরুল ইসলাম হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
হাসপাতালের একজন স্টাফ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রথমে দোকানে মেডিকেল অফিসারকে হামলার পর মনিরুল ইসলাম পুনরায় দলবল নিয়ে হাসপাতাল অভ্যন্তরে এসেও ডাক্তারকে মারপিট করতে চায়।
হাসপাতালের অপর মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত কুমার জানান, ঘটনাটিতে আমরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছি। সিভিল সার্জন স্যার বিষয়টি দেখছেন। আশাকরি তিনি এর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তবে এ ব্যপারে হামলাকারী এস.এম ড্রাগ হাউজের মালিক মনিরুল সরদার বলেন, হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে কথাকাটাকাটি হয়েছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়ত বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আসাদুজ্জামান এক রোগীর জন্য ব্যবস্থাপত্র লেখেন। দোকানদার সেই ঔষধ না দিয়ে অন্য ঔষধ দেয়। সেটি বদলানোকে ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
Leave a reply