গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
ভ্যান ছিনতাই চেষ্টায় আটক ছিনতাইকারীকে উদ্ধার করতে গিয়ে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর থানার ওসি, তদন্তসহ পাঁচ পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও আড়াই শতাধিক আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (৯ মে) বিকেলে সাদুল্লাপুর থানায় ধাপেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক রজব আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এছাড়া ভ্যান ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে চারজনকে আসামি করে আরও একটি মামলা করেছে ভ্যান চালক কিশোরের বাবা ওয়াহেদ মণ্ডল।
এদিকে, পৃথক এই দুই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে পুলিশের মামলায় আরিফ, শফিউল ও রাহেনুল এবং ভ্যান ছিনতাই মামলায় গ্রেফতার করা হয় মেহেদি ও হিরু নামে দুইজনকে। গ্রেফতার সকলের বাড়ি ধাপেরহাট ইউনিয়নের সদরপাড়া, বউ বাজার ও ছত্রগাছা গ্রামে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে মেহেদি ও ফরিদুল নামে দুই যুবক পীরগঞ্জের চতরা গ্রামের ওয়াহেদ মণ্ডলের ছেলে সিয়াম মিয়ার (১৩) ব্যাটারি চালিত ভ্যান ভাড়া করে ঘুরে বেড়ায়। বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যার পরে সদরপাড়ার (সন্ন্যাসীর দিঘি) একটি কাঁচা রাস্তায় কিশোরের কাছ থেকে ভ্যান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে মেহেদী ও ফরিদুল। কিন্তু কিশোরের চিৎকারে তাদের দুইজনকে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দেয় স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে পুলিশ ছিনতাইকারী, ভ্যান ও চালককে উদ্ধারে ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়। এসময় তারা আটক ছিনতাইকারীর তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করেন। কিন্তু পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে তাতে বাধা দিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ পিকআপে থাকা পুলিশের ওপর হামলা করে স্থানীয় লোকজন। এতে ওসি, তদন্তসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত পুলিশ, আটক ছিনতাইকারী ও ভ্যানসহ চালকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ওসি আরও জানান, কর্তব্য কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৪৫ জন নামীয় অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এছাড়া ভ্যান ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে আটক মেহেদিসহ চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরের বাবা। ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, এলাকাবাসী বলছে, সন্ন্যাসীর দিঘিসহ আশপাশ এলাকায় সর্বশেষ দেড় বছর আগে দুই চালককে হত্যার পর ভ্যান ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া মওয়াগাড়ির অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যকেও গলাকেটে হত্যা এবং বোয়ালিদহ গ্রামের এক ব্যক্তিকে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই, হত্যাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে তাদের অভিযোগ। তবে এই চক্রকে শনাক্তসহ দ্রুত গ্রেফতারের দাবিও এলাকাবাসীর।
Leave a reply