সব জায়গা থেকে বিতাড়িত হয়ে অবশেষে আইসোলেশনে

|

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকা অবস্থায় জ্বরে আক্রান্ত হন মৌসুমী আক্তার (২০)। করোনা সন্দেহে এক প্রকার জবরদস্তি ও নির্যাতন করে তাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।

পরে তিনি এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা সদরের বাজারগ্রামে পিতার বাড়িতে পৌঁছান। সেখানেও অতি উৎসাহী প্রতিবেশিদের কারণে শুরু হয় বিপত্তি।

বাধ্য হয়ে ওই তরুণী আশ্রয় নেন পিতার বাড়ির পাশে সাবেক এমপি এইচএম গোলাম রেজার নির্মাণাধীন বাড়ির একটি কক্ষে। কিন্তু সেখান থেকে ১৩ মে সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল জোরপূর্বক তাকে বের করে দেন। পরে তিনি চলে যান পাশ্ববর্তী মথুরেশপুর ইউনিয়নে অবস্থিত দাদার বাড়িতে। সেখানে থাকতেও বাঁধা দেয় এলাকাবাসি।

একদিকে জ্বরের কারণে ক্লান্ত শরীর, অপরদিকে একের পর এক আশ্রয় হারানোর কষ্টে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মাঠের এক কোনায় বসে কান্নাকাটি করছিল মৌসুমী আক্তার। বিষয়টি কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক রাসেলের নজরে আসে। পরে ওই তরুণীর কাছে বিস্তারিত ঘটনা শোনে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে আছেন।

মৌসুমী আক্তারের খালা মোমেনা খাতুন শাস্তি দাবি করে বলেন, অসুস্থ একজন মানুষের সাথে যারা এমন অমানবিক আচরণ করেছেন তাদের শাস্তি দিতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমান বলেন, ‘মৌসুমী স্বাভাবিক জ্বরে আক্রান্ত বলেই মনে হচ্ছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি এখন অনেকটা সুস্থ। তাকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, ‘অতি উৎসাহী কিছু মানুষ মৌসুমীর সাথে অত্যন্ত অমানবিক আচরণ করেছে। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply