৬ দিন পর সেই প্রসূতি মায়ের বাড়িতে খাবার নিয়ে গেলেন চিকিৎসকরা

|

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে হাসপাতাল গেটে সন্তান জন্মের ছয়দিন পর সেই প্রসূতি মায়ের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবরসহ তাদের খাদ্য সহায়তা করেছেন চিকিৎসকরা। এসময় জন্ম নেওয়া শিশুটিকেও পোশাক উপহার দেয়া হয়।

শনিবার বিকেলে সাদুল্লাপুর উপজেলা জামুডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রসূতির রাশেদা ও শিশু সন্তানের হাতে খাদ্য সামগ্রী ও উপহার তুলে দেন সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মো. শাহীনুল ইসলাম মণ্ডল।

শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু ও তার মা বর্তমানে সুস্থ আছেন। তাদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। দরিদ্র পরিবারকে চাল, ডাল, আলু, তেলসহ খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে। এছাড়া ফলসহ পুষ্টিকর খাবার ও শিশুকে পোশাক উপহার দেয়া হয়। এছাড়া ভুক্তভোগী পরিবার ও তাদের সঙ্গে হাসপাতালে থাকা লোকজনের কাছেও ঘটনাসহ বিস্তারিত অভিযোগ জানা হয়। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি পরিবারটির সহায়তায় স্বাস্থ্য বিভাগ পাশে থাকবে বলে জানান তিনি’।

তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালের গেটে সন্তান জন্মের অভিযোগ তদন্ত করছে দুটি তদন্ত কমিটি। কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

এদিকে, চিকিৎসকরা বাড়িতে এসে খোঁজ-খবর নিয়ে খাদ্য সহায়তা দেওয়ায় কিছুটা খুশি হলেও ক্ষোভ ও অভিযোগের শেষ নেয় ভুক্তভোগী পরিবারের। শিশুর বাবা বাদশা মিয়ার অভিযোগ, ছয়দিন পর তাদের খোঁজ নেওয়া হলো। এর আগে কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি। দিনমজুরের কাজ করে কোন রকমে সংসার চলে। এখন কাজকাম নেই। সন্তান জন্ম ও চিকিৎসা না পাওয়ায় কয়েক দফায় টাকা খরচ করতে হয়েছে। বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে ধারদেনা করে দিন চলছে। হাসপাতালে সেবার পরিবর্তে তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ এবং হয়রানী করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ঈদের দিন বিকালে সাদুল্লাপুর উপজেলা জামুডাঙ্গা (বাঁধের মাথা) গ্রামের দরিদ্র বাদশা মিয়ার স্ত্রী রাশেদা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। কিন্তু সেখানে দায়িত্বরত সেবিকা বাসনা রাণী, অফিস সহায়ক শিল্পী রাণী ও জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মিঠুন কুমার বর্মণ প্রসূতিকে ভর্তি না করে গাইবান্ধা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। নিরুপায় হয়ে প্রসূতিকে নিয়ে হাসপাতালের গেটে আসেন স্বজনরা। এসময় প্রসব বেদনায় ছটফট করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রাশেদা। পরে সেখানে ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় রাশেদা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply