চিকিৎসা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন না হলে মহাবিপর্যয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ- এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
যমুনা নিউজের সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, করোনা মোকাবেলার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে সাহস। নিজের করোনা মুক্তি ও দেশ নিয়ে ভাবনার কথাও বলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
ডা. জাফরুল্লাহ’র মতে, গ্রামগঞ্জে ব্যাপক হারে করোনা ছড়িয়ে পড়লে জটিল হবে পরিস্থিতি। ঝুঁকিতে পড়বে লাখ লাখ মানুষ। তখন কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, সেটাই উদ্বেগের বড় কারণ।
উল্লেখ্য বয়স আর নানা অসুস্থ্যতায় ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত ডা. জাফরুল্লাহ। কিন্তু মনের ভেতর পঁচিশ-ত্রিশের তারুণ্য। প্রায় আশি বছর বয়সেও অসম্ভব প্রাণশক্তি তার। করোনা জয়ের পর দিনই ছুটে যান বনানী কবরস্থানে, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মরদেহ দেখতে। অসুস্থ অবস্থাতেই সারাক্ষণ ভাবছেন সাধারণ মানুষের কথা, লিখছেনও তাদের নিয়ে। কোথায় পান এত প্রাণশক্তি?
উত্তরে ডা. জাফরুল্লাহ জানালেন- ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং মানুষের ভালোবাসা আমার বেঁচে থাকার শক্তি। মুক্তিযুদ্ধের পরে এখনও অনেক কাজ করতে বাকি আছে। আর সেগুলো ভাবতেই পাই এত প্রাণশক্তি।’
‘করোনা বিজয়ী বীর’ বলে সম্বোধন করতেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে শিশুদের মতো হেসে ওঠেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। করোনা মুক্তির গল্পেরচ্ছলে অবলীলায় বলেন, অজানা অনেক কথা।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, করোনা শনাক্তের পর সাহস ধরে রাখাই জয়ের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। তিনি বলেন, বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছাই বাঁচিয়ে রাখবে মানুষকে। আমি করোনা থেকে ফিরে এসেছি মানুষের ভালোবাসা আর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার ও নার্সদের অক্লান্ত পরিশ্রমে। তারা আমাকে নিয়ে ভয় পেয়ে দামি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেছে যা ব্যবহার করার দরকার ছিলো না।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করতে না পারায় ৫০ টাকার ওষুধ ৬০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। তিনি বলেন, করোনা থেকে রক্ষা পেতে মনের সাহস থাকতে হবে। ভয় পেলে চলবে না। এছাড়া নিজের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখতে বলেন তিনি।
তিনি বলেন, একগাদা ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। অপ্রয়োজনে অ্যন্টিবায়োটিক খেতে হবে না। তবে খাওয়া দাওয়া করতে হবে নিয়মমতো এবং সেইসাথে সেবা জরুরি।
সবকিছুর পরও সুদিনে ফেরার স্বপ্ন বিভোর ডা. জাফরুল্লাহ। চোখে-মুখে ৭১ সালের বিজয়ের আনন্দ, এখনও ভাবেন সাম্য আসবে, অন্তত সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক ইস্যুতে।
Leave a reply