ভারতে গত বিশ বছরে ১২ লাখ মানুষ সাপের কামড়ে মারা গেছে বলে নতুন এক গবেষণার ফলাফলে জানা গেছে। গবেষণার জরিপে বলা হয়েছে সাপের কামড়ে মৃতের প্রায় অর্ধেকের বয়স ৩০ থেকে ৬৯ এর মধ্যে, এবং এক চতুর্থাংশ শিশু। খবর বিবিসি।
ভারতে সাধারণত কোবরা, রাসেলস ভাইপার এবং ক্রেইৎস এসব সাপের কামড়েই বেশির ভাগ মানুষ মারা যায়। এছাড়া আরও ১২টি প্রজাতির সাপের কামড়েও মানুষ মারা যাচ্ছেন। এদিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় যেসব এলাকায় দ্রুত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় না। বর্ষাকালে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এই সময় সাপ বাইরে বেরিয়ে আসে বেশি। আর সাপ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কামড় দেয় পায়ে।
ই-লাইফ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাটি যৌথভাবে ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ব্যবহার করেন। ভারতে অসময়ে মৃত্যুর ওপর চালানো মিলিয়ন ডেথ টাডি নামে বিশাল এক জরিপ থেকেও তথ্য নেয়া হয়েছে এই গবেষণার কাজে।
রাসেলস ভাইপার ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় খুবই বিষধর প্রজাতির সাপ। এই অঞ্চলে এই সাপ দেখা যায় খুবই বেশি। এরা সাধারণত ইঁদুর জাতীয় প্রাণী খায়। কাজেই শহরাঞ্চলে এবং গ্রামেও মানুষের বাসার আশেপাশেই তাদের ঘোরাফেরা বেশি।
ভারতীয় ক্রেইৎ সাপ সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায় না। কিন্তু রাতের বেলা তারা হিংস্র হয়ে ওঠে। এই সাপ দৈর্ঘে প্রায় পাঁচ ফুট ৯ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।
এছাড়া ভারতীয় কোবরা বা গোখরা সাপ সাধারণত কামড়ায় অন্ধকারের পর। গোখরার কামড়ে শরীরের ভেতর রক্তক্ষরণ হয়। ফলে এই সাপ কামড়ালে সাথে সাথে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।
এই জরিপের ফলাফলে দেখানো হয়েছে, ২০০১ সালে থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সাপের কামড়ে মারা যাবার ৭০% ঘটনা ঘটেছে ভারতের আটটি রাজ্যে- বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্য প্রদেশ, ওড়িশা,উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ, রাজস্থান এবং গুজরাটে।
গবেষকরা বলছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন গ্রামে কৃষক সম্প্রদায়ের মানুষ। তারা বর্ষা মরশুমে সর্প দংশনের বড় ঝুঁকিতে থাকেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে সাপের কামড়ের বিষয়টিকে এখন তারা “বিশ্ব স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার” দিচ্ছে।
Leave a reply