চলে গেলেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান, সফল শিল্পোদ্যোক্তা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। দেশের এই বিশিষ্টজনের মৃত্যুতে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন সর্বস্তরের মানুষ। নুরুল ইসলামকে স্মরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ লিখেছেন, মৃত্যুকালেও তিনি এক টাকা খেলাপি ঋণ রেখে যাননি। অথচ তার থেকে অনেক ছোট উদ্যোক্তা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর ফেরত দেননি। সে কারণে আজ বিপুল অংকের খেলাপি ঋণে ডুবতে বসেছে ব্যাংকিং খাত। শুধু নিজে খেলাপিমুক্ত ছিলেন, ব্যাপারটা এমন নয়। তিনি একাধারে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদের লেখাটি তুলে ধরা হলো।
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ছিলেন দেশের শিল্প খাতের একজন অনন্য এবং সফল উদ্যোক্তা। যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানে সোনা ফলিয়েছেন ক্ষণজন্মা এই শিল্পোদ্যোক্তা। এক পা, দুই পা ফেলে এগিয়েছেন অনেক দূর। গড়েছেন বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান। সৃষ্টি করেছেন লাখো মানুষের কর্মসংস্থান।
এসব উদ্যোগ সফল করতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনও খেলাপি ছিলেন না। এমনকি মৃত্যুকালেও তিনি এক টাকা খেলাপি ঋণ রেখে যাননি। অথচ তার থেকে অনেক ছোট উদ্যোক্তা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর ফেরত দেননি। সে কারণে আজ বিপুল অংকের খেলাপি ঋণে ডুবতে বসেছে ব্যাংকিং খাত।
নুরুল ইসলাম শুধু নিজে খেলাপিমুক্ত ছিলেন, ব্যাপারটা এমন নয়। তিনি একাধারে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। কখনও কোনো দুর্নীতিবাজের সঙ্গে সমঝোতা করেননি। ছিলেন আপোসহীন। তার সৃষ্টি দৈনিক যুগান্তর সাহসী কলম এবং যমুনা টিভি সাহসী কণ্ঠ হয়ে সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে। সাধারণত পত্রিকার মালিকরা গা বাঁচিয়ে চলেন। কিন্তু নুরুল ইসলাম ছিলেন ব্যতিক্রম। এজন্য তাকে অনেক মূল্যও দিতে হয়েছে। সব সময় চাপে থাকতেন।
বাংলাদেশের বড় রোগ অর্থ পাচার। প্রতি বছর বিপুল অংকের টাকা ডলারে পরিবর্তন হয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা পাচার করে এক শ্রেণির অসাধু চক্র সেখানে গড়ে তুলছে সেকেন্ড হোম। বিশেষ করে সিঙ্গাপুর, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে এটা অহরহ ঘটছে। অর্থ পাচারের তীব্র বিরোধী ছিলেন নুরুল ইসলাম। তিনি আজ নেই। আছে তার আদর্শ আর নীতি। আশা করি সে নীতি-আদর্শই অনুসরণ করবেন তার উত্তরসূরিরা।
Leave a reply