রক্ত জমাট বেঁধেছিল মাথায়। তা নিয়েই পাঁচটি সরকারি হাসপাতালে চার দিন ধরে ঘুরেও যথাযথ চিকিৎসা মেলেনি। শেষে নিঃসন্তান ওই ব্যক্তিকে বাড়িতেই ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। শনিবার দুপুরে সেখানেই মৃত্যু হল দীর্ঘদিন স্নায়ুরোগে ভোগা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেলুড়ের লালাবাবু সায়র রোডের বাসিন্দা মনোরঞ্জন রায়ের (৪২)।
স্থানীয় একটি চটকলের কর্মী মনোরঞ্জন অসুস্থতার জন্য কাজে যেতে পারতেন না। স্ত্রী সোমাদেবী পরিচারিকার কাজ করেন। ১০ আগস্ট হঠাৎ জ্ঞান হারান মনোরঞ্জন। জ্ঞান ফিরলেও হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। তার ছোট ভাই বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী নেই শুনে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে মাথায় স্ক্যান করা হয়। পরের দিন চিকিৎসকেরা জানান, তার মাথায় রক্ত জমে রয়েছে, অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। তাই তাকে আর জি করে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’
বিশ্বজিতের দাবি, হাওড়া হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে সেখানে যাওয়ার পরে এক ঘণ্টার জন্য ভর্তি নেয়া হয়েছিল। পরে ট্রমা কেয়ারের চিকিৎসক জানিয়ে দেন, অস্ত্রোপচারের যন্ত্র খারাপ।
আরেক ভাই কার্তিক রায় বলেন, ‘ওই রাতেই এন আর এসে গেলে বলা হয় স্নায়ুরোগ বিভাগে বেড নেই। অন্য জায়গায় রাখলে করোনা হতে পারে। ভয়ে তাই সেখান থেকে চলে আসি। ১২ আগস্ট ভাইকে নিয়ে পিজিতে যাই।’ অভিযোগ, সেখানেও শয্যা নেই জানিয়ে ১৩ আগস্ট যেতে বলা হয়। ১৩ তারিখেও বাঙুর আর পিজির জরুরি বিভাগে বারবার ঘুরেও ভর্তি করা যায়নি।’ শেষে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন স্বজনরা।
করোনা পরিস্থিতিতে অন্য রোগে আক্রান্ত রোগীরা অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলেই অভিযোগ উঠছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘যদি এমন ঘটে থাকে তা হলে ঠিক হয়নি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
Leave a reply