চকরিয়ায় নির্যাতিতা সেই মা-মেয়ে অবশেষে কারামুক্ত

|

ফাইল ছবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গরু চুরির অপবাদে নির্যাতিত ও দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দী থাকা মা-মেয়ে কারামুক্ত হয়েছেন।

সোমবার সন্ধা ৭টার পর তারা কক্সবাজার কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। কক্সবাজার কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. মোকাম্মেল হোসেন সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেন। এর আগে দুপুরে আদালত কর্তৃক জামিনলাভ করেন তারা।

একইদিন সকালে তাদেরকে চকরিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালত মা ও দুই মেয়ের জামিন মঞ্জুর করেন। চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজিব কুমার দেব তাদের পরবর্তী ধার্য্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

চকরিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক জানান, গরু চুরি মামলার ৫ আসামির মধ্যে ৩ জন নারীকে জামিন দেয়া হয়েছে। বাকি দু’জন পুরুষ আসামির জামিন মঞ্জুর করেনি আদালত।

জামিন প্রাপ্তরা হলেন, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাট কুসুমপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের স্ত্রী পারভীন আক্তার (৫৫) ও তার দুই কন্যা সেলিনা আক্তার (২৮) এবং রোজিনা আক্তার (২৫)।

আর জামিন মঞ্জুর হয়নি পারভীন আক্তারের ছেলে মোহাম্মদ আরমান (৩০) ও পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ ছুট্টুর (৩৮)।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) দুপুরে হারবাংয়ের দক্ষিণ পহরচাঁদা এলাকায় মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ততক্ষণে উদ্ধার হওয়া গরুর মালিক মো. মাহবুবুল হকের দায়ের করা মামলায় জেলে প্রেরণ করা হয় একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জনকে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মা-মেয়েকে নির্যাতনের ছবি ভাইরাল হলে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন। এ ঘটনায় রবিবার (২৩ আগস্ট) চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলাও নেয়া হয়েছে। মামলাটি চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেবেদন দেওয়ার জন্য
নির্দেশনা দেন বিচারক রাজিব কুমার দেব।

ওই একই বিচারকের আদালতে আজ গরু চুরির মামলাটির শুনানি হয় এবং ৩ জনের জামিন মঞ্জুর হয় ২ জনের জামিন নামঞ্জুর হয়।

এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় হতে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কমিটিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপ-সচিব) শ্রাবস্তী রায়কে প্রধান করা হয়েছে।

আজ দুপুর থেকে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। দুপুর কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে কথা বলেছেন।

গত ২১ আগষ্ট হারবাং ইউনিয়ন পরিষদে ঘটনার পর ২৩ আগষ্ট দিবাগত রাত থেকে মা-মেয়ে ছেলেকে নিযার্তনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে স্থানীয় হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের বিরুদ্ধে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply