পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
দীর্ঘদিন ধরে পটুয়াখালী সেতুর দক্ষিণপাশে মহাসড়কে মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে পৌর কর্তৃপক্ষের টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশের সুত্র ধরে গত ৬ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহম্মদ মইনুল হাসান এ অবৈধ টোল আদায় বন্ধ করে দেন।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার বলেন, ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সরোজ কুমার নাথ স্বাক্ষরিত একটি আদেশে বলা হয়, যে সকল পৌরসভা মহাসড়কে বাস/ট্রাক র্টামিনালের বাইরে বক্স বসিয়ে টোল/ট্যাক্স আদায় করছে, তা সম্পূর্ন অবৈধ। তাই টোল আদায় বন্ধ করা হয়েছে।
এদিকে অবৈধ এই টোল আদায় বন্ধে তৎকালীণ সময়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আদেশ দেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে অবৈধ এই টোল আদায় বন্ধ হয়নি। যে কারণে খেসারত দিতে হতো পরিবহন সেক্টরকে।
পটুয়াখালী ট্রাক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে পটুয়াখালী সেতু দক্ষিণ পাশে বক্স বসিয়ে টোল আদায় শুরু করে পটুয়াখালী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। একইভাবে কলাপাড়া উপজেলায় শেখ কামাল সেতু সংলগ্ন মহসড়কের পাশে বক্স বসিয়ে টোল আদায় করা হতো র্দীঘদিন ধরেই।
কিন্তু মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশে বলা হয়, যানবাহন পণ্য পরিবহন অথবা ওঠা-নামার ক্ষেত্রে যদি পৌর স্ট্যান্ড/র্টামিনাল ব্যবহার করে তা হলে সংশ্লিষ্ট পরিবহন পৌরসভাকে টোল/ট্যাক্স দেবে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়ের মূল আদেশ অমান্য করে পৌরসভার সড়ক ব্যবহার করা সকল পরিবহন ও ট্রাক থেকে টোল আদায় শুরু করে। টোল আদায়ের এই ধারাবাহিকতা দীর্ঘ ৪-৫ বছর ধরে চলে আসছিল।
পটুয়াখালী পৌরসভার টোল আদায় করা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, মাত্র দুই মাস আগেই সঠিকভাবে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পটুয়াখালী পৌরসভা থেকে টোল আদায়ের দরপত্র লাভ করেন তিনি। এ জন্য পৌর তহবিলে তাকে ১২ লাখ টাকা জমা দিতে হয়। কিন্তু গত ০৬ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুকিত হাসান খান টোল আদায় অবৈধ গণ্য করে বন্ধ করে দিয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান জানান, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশে টোল আদায় অবৈধ বলে গণ্য করা হয়েছে। তাই মন্ত্রণালয়ের আদেশ পুলিশ বাস্তবায়ন করেছে।
পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, টোল আদায় বিগত দিন থেকেই হচ্ছে। তবে নিয়মানুযায়ী ট্রাকগুলো শহরের কোনো স্থানে দাঁড়িয়ে পণ্য পরিবহন ওঠা-নামা করবে। কিন্তু ট্রাকগুলো মহসড়কেই পণ্য পরিবহন করছে। তাই মহসড়কে বক্স বসিয়ে টোল আদায় করা হতো। যেহেতু এটা নিয়ে আপত্তি উঠেছে। তাই আমরা সঠিক প্রক্রিয়ার টোল আদায় করবো।
কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল হালদার জানান, কলাপাড়া পৌরসভা মহাসড়কে কোন টোল আদায় করেনি। তবে একটি চক্র শেখ কামাল সেতু সংলগ্ন মহসড়কে টোল আদায় করছে। এর প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করার পরেও টোল আদায় বন্ধ হয়নি।
Leave a reply