দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার আগে পূর্বপ্রস্তুতি শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদানের জন্য প্রস্তুত করতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বব্যাপী বিদ্যালয়গুলোর মতো বাংলাদেশেও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ। ফলে শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যাঘাতসহ শিশুর শিখন যোগ্যতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা যত বেশি সময় বিদ্যালয়ের বাইরে থাকবে, তাদের বিদ্যালয়ে ফেরার সম্ভাবনা ততই কমে যাবে। জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিগগিরই বিদ্যালয় পুনরায় চালু করা অতীব জরুরি। বিদ্যালয় পুনরায় চালুর আগে পূর্বপ্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা আবশ্যক। এ লক্ষ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর বিষয়ে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয় এবং সেই অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
বলা হয়েছে, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় বিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন গাইডলাইনের আলোকে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ে নিজস্ব পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ওই গাইডলাইনের আলোকে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর পূর্বে পূর্বপ্রস্তুতিমূলক বিবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এ প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ে স্লিপ বরাদ্দ ফান্ড দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে।
পরিপত্রে নির্দেশনায় বলা হয়েছে- এ জন্য ক্লাসরুমসহ বিদ্যালয়ের পুরো আঙ্গিনা সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং জীবাণুমুক্ত করা, বিদ্যালয়ের সব আসবাবপত্র সার্বক্ষণিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং জীবাণুমুক্ত করা, শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র ইনফ্রারেড থার্মোমিটার স্থানীয়ভাবে ক্রয়, সাবান, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি ক্রয়, ওয়াশব্লক ও টয়লেট সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, মগ, জগ, বালতি ক্রয়, অস্থায়ীভাবে হাত ধোয়ার স্থান নির্ধারণ করে হাত ধোয়ার পানি ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য শ্রমিকের যৌক্তিক সেবা ক্রয় (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), কোভিড-১৯ মেয়াদকালে ইন্টারনেট ডাটা ক্রয় (এ খাতে বরাদ্দ না থাকলে) করতে হবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, বিদ্যালয়ে বরাদ্দ স্লিপ ফান্ড থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে সামগ্রী/সেবা ক্রয়/সংগ্রহ করা যাবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকার আলোকে স্ব-স্ব বিদ্যালয় স্থানীয়ভাবে প্ল্যান গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবে। উপযুক্ত ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত আর্থিক বিধি-বিধান অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর পুনরায় বিদ্যালয় চালুর জন্য নির্দেশিকা প্রস্তুত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশিকা মেনে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার আগে যেসব পূর্বপ্রস্তুতি নেয়া দরকার- তা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা এবং বিদ্যালয় আঙ্গিনা ও আসবাবপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইউএইচ/
Leave a reply