তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বর্ষায় তিস্তা গিলে খাচ্ছে উত্তরের বসতবাড়ি, আবাদি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। তিস্তার পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি, রাস্তাসহ জমির ফসল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৭ হাজার পরিবার। ইতোমধ্যে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কৃষিশ্রমনির্ভর পরিবারগুলোর মাঝে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। দুটি গ্রামের প্রায় ৩শ’ বাড়িঘর, ঈদগা মাঠ, মন্দিরসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
এছাড়া পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার একর আমন ধানের জমি। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ভাঙন বেড়েছে। বসতভিটা জমিজমা হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন।
বন্যায় ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, ল্যাট্রিন, নলকূপ পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট। স্যানিটেশন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বন্যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। লোকজন গবাদিপশু নিয়ে আবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে দেয়ালচাপা পড়ে একজন নিহত হয়েছে। টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর গাইড বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়ায় বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
কুড়িগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ রেকর্ড ২৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হওয়ায় পানি নামছে ধীরে। হাঁটুপানিতে রিকশা ও গাড়ি চলছে অনেক ঝুঁকি নিয়ে। এতে অফিস-আদালতগামী মানুষ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হন। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নতুন করে আরও ২৫টি চর প্লাবিত হয়েছে। এতে ১২০টি চরের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমরসহ ১৬টি নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার ৬৭টি উন্মুক্ত পয়েন্টে ভাঙন তীব্ররুপ ধারণ করেছে।
নেত্রকোনায় তলিয়ে গেছে রোপা-আমনের ১৯ হাজার ৯শ’ ৫৮ হেক্টর জমির ফসল। এছাড়াও তলিয়ে গেছে নেত্রকোনা-সিধলী-কলমাকান্দা সড়ক। পানি উঠতে শুরু করেছে দশ উপজেলার বসতবাড়িতে। মদন উপজেলায় ১ হাজার ১০ হেক্টর আমন ফসল তলিয়ে গেছে। মগড়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলায় সদ্য রোপণ করা ১ হাজার ১০ হেক্টর আমন জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
Leave a reply