নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে সিআইডি পুলিশ। একই সাথে নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি ও তোয়ালে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরা সিআইডি অফিসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গত ১৫ অক্টোবর ভোর রাতে ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে মাহি ও মেয়ে তাসনিমকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় শাহিনুরের ভাই রায়হানুলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এরপরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের হয়ে আসে।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুর একাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। রায়হানুল বর্তমানে কোন কাজ করতো না। ফলে বিগত বেশ কিছুদিন তার কোন আয় ছিল না। একই সাথে গত ৯-১০ মাস আগে তার স্ত্রী চলে যায়। এজন্য সে বড় ভাইয়ের পরিবারের সাথে খাওয়া-দাওয়া করতো। কিন্তু খাওয়া-দাওয়া নিয়ে তার ভাবি সাবিনা খাতুন তাকে প্রায় গালমন্দ করতো; ঠিক মতো খেতে দিতো না। এতে তার মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের জন্ম নেয়। এক পর্যায়ে সে ভাবি সাবিনা খাতুনকে হত্যা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য ১৪ অক্টোবর রাতে পাশের ফার্মেসি থেকে ঘুুমের ওষুধ ডিসোপেন ও স্থানীয় মুদি দোকান থেকে স্পিড (পানীয়) কিনে তাতে মিশিয়ে তার ভাবি ও ভাইপো-ভাতিজিকে খেতে দেয়।
রাতে রায়হানুল তার বড় ভাইয়ের ঘরে টিভিতে আইপিএল খেলা দেখছিল। রাত দেড়টার দিকে বড়ভাই বাড়ি এসে দেখে রায়হানুল তার ঘরে বসে টিভি দেখছে। এসময় বড় ভাই তাকে টিভি দেখার জন্য বকাঝকা করে বলে- তুই বিদ্যুৎ বিল দেস? টিভি দেখতেছস কেন? এ সময় রাহানুল তার ভাইকে বলে এ মাসের বিদ্যুৎ বিল আমি দিয়ে দেব তুমি এই স্পিডটি খাও। বড়ভাই তখন তার দেওয়া স্পিডটি খায়।
এরপর রাতের কোন এক সময় সে ঘরের কার্নিস বেয়ে বড় ভাইয়ের ঘরের ছাদে উঠে চিলে কোঠার দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় ভাইকে জবাই করে হত্যা করে। পরে পাশের ঘরে থাকা ভাবিকেও একইভাবে হত্যা করে। হত্যার সময় ভাবি চিৎকার দিলে ভাইপো-ভাতিজিও উঠে যায়। তখন তাদেরও হত্যা করে রাহানুল। পরে সে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিটি বাড়ির পাশের বড় পুকুরে ফেলে দেয়।
অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক আরও বলেন, রায়হানুলের দেয়া তথ্য মতে তাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে বুধবার পুকুর থেকে চাপাতি ও তোয়ালেটি উদ্ধার করা হয়েছে।
Leave a reply