রাজনীতিতে দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে সক্রিয়। হোয়াইট হাউজের দৌড়ে নেমেছেন একাধিকবার; অভিজ্ঞতা আর প্রজ্ঞায় বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬-তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের। ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হিসেবে বরাবরই উগ্র ডানপন্হার বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। অর্থনীতি এবং পররাষ্ট্র ইস্যুতে তথাকথিত মার্কিন মোড়লিপনার বিপক্ষে গিয়ে প্রথাবিরোধী রাজনীতির প্রচলনও এই নেতার হাত ধরেই। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে, এর চেয়ে বেশি বয়সে প্রেসিডেন্ট হননি কেউ।
ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়ারে তার বিষয় ছিলো ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইন। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই হাতেখড়ি রাজনীতির। যেখানে কেবলই সফলতার গল্প। ১৯৭২ সালে, মাত্র ৩০ বছর বয়সে ডেমোক্রেটিক পার্টির টিকিটে ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত হন সিনেটর।
সিনেটর নির্বাচনে একবারও হারেননি টানা ৩৬ বছর ছিলেন সে দায়িত্ব। দীর্ঘদিন ছিলেন সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য। ২০০৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ইরাক অভিযানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন তিনি।
১৯৮৮ সালে, প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়নের দৌড়ে নামলেও, সুবিধা করতে পারেননি বাইডেন। এর ২০ বছর পর, ২০০৮ সালে আবার মনোনয়ন দৌড়ে নেমে হার মানতে হয় বারাক ওবামার কারিশমার কাছে। কিন্তু, নিজের চেয়ে বয়সে অনেক বড় বাইডেনকেই রানিং মেট করেন ওবামা।
৮ বছর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে থেকে যখন বিদায় নেন তখনই বাইডেনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি দেখেছিলেন অনেকে। কিন্তু, বাইডেন যেন ভিন্ন ধাতুতে গড়া। ৭৮ বছর বয়সে এসেও জয় করলেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার কঠিন লড়াই।
বাইডেন মনে করেন, ট্রাম্প যে ক্ষতি করে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের, তা মেরামত করাই তার প্রধান কাজ। করোনা মহামারি মোকাবেলায় অগ্রাধিকার, খনিজ জ্বালানি নির্ভরতা কমানো, ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরা, মিত্রদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন-ইত্যাদি তার প্রধান প্রতিশ্রুতি।
প্রচারণার মাঠে বারবারই বাইডেনের বয়স আর শারীরিক অবস্থা নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন ট্রাম্প। প্রশ্ন তোলেন, প্রতিশ্রুতি পূরণের সক্ষমতা নিয়েও। ট্রাম্পের বড় সমালোচনা ছিলো, দীর্ঘ ৪৭ বছর জনপ্রতিনিধি থেকেও যিনি পরিবর্তন আনতে পারেননি ৪ বছরে তার কাছে বেশি কিছু আশা করা কঠিন।
কিন্তু মার্কিনিরা শেষ পর্যন্ত আস্থা রেখেছেন বৃদ্ধ বাইডেনের ওপরই। এখন সামনের দিনগুলোতে ওভাল অফিস কীভাবে চালাবেন এই অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ সেটির দিকেই তাকিয়ে থাকবে কোটি কোটি মানুষ। তার ওপরই যে অনেকখানি নির্ভর করবে আগামীদিনের বিশ্বের গতি ও স্থিতি।
Leave a reply