জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার শুরু হচ্ছে বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম; যা আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মূল্যবান ভাষণ দেবেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনীর ওপর সংসদ সদস্যরা আলোচনা করবেন। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের এই বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে।
দেশের ইতিহাসে প্রথম এই বিশেষ অধিবেশন চলাকালে সংসদ ভবনজুড়ে উৎসবের আমেজ লক্ষ করা গেছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ওপর স্মারক বক্তৃতা দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
অধিবেশনের শুরুতে সব সংসদ সদস্যকে অধিবেশনে স্বাগত জানিয়ে স্পিকার বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই অধিবেশন আহ্বান করেছেন।
উচ্চ আদালতের নির্দেশমতো অধিবেশনকক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি টানানো হয়েছে বলে সংসদকে অবহিত করেন স্পিকার। এরপর গুরুত্বপূর্ণ এই অধিবেশন পরিচালনায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন। এরপর স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অধিবেশন পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যদের সভাপতিমণ্ডলী নির্বাচন করেন স্পিকার। নির্বাচিতরা হলেন-আবুল কালাম আজাদ, বীরেন শিকদার, মো. শামসুল হক টুকু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও উম্মে কুলসুম স্মৃতি।
অধিবেশনে ছয়জন সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব আনা হয়। তারা হলেন- সাবেক গণপরিষদ সদস্য সৈয়দ এ কে এম এমদাদুল বারী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, নুরুল ইসলাম, খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল ও শামছুল হক তালুকদার ছানু।
এ ছাড়া দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) মাহবুবে আলম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী, একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কবি আবুল হাসনাতের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। শোক প্রস্তাব উত্থাপন শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৬টায় সংসদের বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম শুরু হবে। শুরুতে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ভাষণ সংসদ কক্ষে দেখানো হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য ও কর্মময় রাজনৈতিক জীবন নিয়ে ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষণ দেবেন। রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার পর তা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সাধারণ প্রস্তাব আনা হবে। ওই প্রস্তাবের ওপর সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের দীর্ঘ আলোচনা শেষে তা পাস হবে। সাধারণ প্রস্তাবের ওপর টানা চার দিন আলোচনা শেষে আগামী বৃহস্পতিবার প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হবে। এরপর আগামী সপ্তাহে দুই বা তিন দিন সাধারণ বৈঠক চলার মাধ্যমে অধিবেশনটি শেষ হবে।
এর আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত ২২ মার্চ সংসদের বিশেষ অধিবেশন (সপ্তম অধিবেশন) আহ্বান করা হলেও দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় তা স্থগিত করেন রাষ্ট্রপতি।
Leave a reply