আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

|

আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক সেনা ও তাদের এদেশীয় সহযোগীরা মিলে হত্যা করে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। তাদের হাতে নিহত ও নিখোঁজ হয় দেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিক।

বিজয়ের ঠিক দুইদিন পূর্বে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে এইসব সূর্য সন্তানদের। পরাজয় আসন্ন জেনে এদেশের মানুষকে মেধাশূন্য করতে হত্যা করা হয় বুদ্ধিজীবীদের। ১৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পরই মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে খোঁজ পাওয়া যায় এইসব বুদ্ধিজীবীদের মরদেহের। এছাড়াও অনেক বুদ্ধিজীবীর মরদেহ নিখোঁজ হয়।

উদ্ধার হওয়া এইসব বুদ্ধিজীবীদের দেহজুড়ে ছিল আঘাত আর নির্যাতনের চিহ্ন। তাদের হত্যা করতে বেছে নেয়া হয় গুলি, জবাই, বেয়নেটের আঘাতসহ নানা নির্মমপন্থা। এরফলে অনেকের মরদেহ শনাক্তও করতে পারেননি তাদের স্বজনেরা।

৭১’র এই দিনে নিহত বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে এ এন এম মুনীর চৌধুরী, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, আবদুল মুকতাদির, ড. জিসি দেব, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, এস এম রাশীদুল হাসান, ড. শাহাদাত আলী, ড. এম এ খায়ের, এ আর খান খাদিম, ড. এন এম ফয়জুল মাহী, ফজলুর রহমান খান, এ এন এম মুনীরুজ্জামান, ড. সিরাজুল হক খান, মো. সাদেক, শরাফত আলী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মীর আবদুল কাইয়ুম, হবিবর রহমান, সুখরঞ্জন সমাদ্দার, ড. আবুল কালাম আজাদ।

সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, খোন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দীন আহমদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, শেখ আবদুল মান্নান (লাডু), সৈয়দ নজমুল হক, এম আখতার, আবুল বাসার, চিশতী হেলালুর রহমান, শিবসদন চক্রবর্তী, সেলিনা পারভীন। এছাড়া শিল্পী আলতাফ মাহমুদ, সাহিত্যিক পূর্ণেন্দু দস্তিদার, মেহেরুন্নেসা, দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহাসহ আরও অনেককে হত্যা করে পাক বাহিনী।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন। এবার করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালিত হবে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় ও কালো পতাকা অর্ধনমিত করন, মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ও রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।

রাতে বুদ্ধিজীবী দিবসের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শ্রদ্ধা জানানো হবে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। এছাড়াও এদিন মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতির পক্ষে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ৭টা ৬ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply