একটা সময় ছিল যখন টাইগারদের টেস্ট দলের পেস বোলিং আক্রমণের মূল অস্ত্র ছিলেন শাহাদাত হোসেন রাজিব। দেশের বেশিরভাগ মানুষই হয়তো তাকে রাজিব নামে চেনেন না, চেনেন শাহাদত হোসেন রাজিব নামেই। বিকেএসপির এই ছাত্র ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকের পর ২০০৬ সালে প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে হ্যাট্রিক করেন হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
তবে, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নানা সময় নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে রাজিবকে। ভুল করেছেন বারেবারেই। সেই সব ভুলগুলো অনেক সময় বিসিবি শুধরে দিয়েছে, আবার কখনো কখনো কঠিন শাস্তিও দিয়েছে তাকে।
২০১৯ সালে জাতীয় লিগে খুলনা ও ঢাকার ম্যাচে মারামারির যে ঘটনাটি ঘটে সেই অপরাধে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে রাজিবকে পাঁচ বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিসিবি। কিন্তু খেলা ছাড়া রাজিবের জীবিকা নির্বাহের কোনো উপায় নেই। পড়ালেখাও তেমন করেননি যে অন্য কিছু করে সংসারের হাল ধরবেন। তার মধ্যে রাজিবের মা ক্যান্সারের শেষ স্তরের রোগী। মায়ের চিকিৎসাও করাতে পারছেন না টাকার অভাবে। যেখানে সংসারের খরচ চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে মায়ের চিকিৎসা করাবেন কীভাবে?
যমুনা নিউজকে শাহাদত আরও বলেন, এমন ভুল আর কখনোই হবে না আমার। আমি ক্রিকেট বোর্ডের কাছে ক্ষমা চাইছি। এটাই শেষবার। আর জীবনেও কখনো বিসিবির ফেভার চাইবো না। বিসিবি আমাকে ক্ষমা করলে সামনের জাতীয় লিগ খেলে অন্তত মায়ের চিকিৎসা করাতে পারবেন তিনি। পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যাবার আগে সন্তান হিসেবে যতটা দায়িত্ব পালন করতে পারি আরকি, এমন কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শাহাদাত হোসেন ।
গেল ২৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে মাঠে খেলার অনুমতি চেয়ে বিসিবির কাছে আবেদন করেছেন রাজিব। যমুনা নিউজকে বলেন, তার মাকে কতদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। তবে বিসিবি যদি তাকে মাফ করে মাঠে খেলার অনুমতি দেয় তবে সেটাই জীবনের বড় প্রাপ্তি। সেই সাথে মায়ের মুখেও ফুটবে হাঁসি।
দেশের হয়ে শাহাদাত হোসেন খেলেছেন ৫১ ওয়ানডে ম্যাচ। যেখানে তিনি শিকার করেছিলেন ৪৭ উইকেট। আর টেস্ট খেলেছিলেন ৩৮টি যেখানে তিনি নিজের ঝুলিতে ভরেছেন ৭২ উইকেট। ৬টি টোয়েন্টিতে তার শিকার ৪ উইকেট।
Leave a reply