নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিবদমান মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল গ্রুপের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানসহ অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় বসুরহাট রূপালী চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় বসুরহাট বাজারের সকল দোকান পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে বাজারের লোকজন চারদিকে ছুটে চলে যায়।
আহতরা হচ্ছেন, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, সাবেক ছাত্র নেতা সালেকিন রিমন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম চৌধুরী শাহীন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্না, সাধারণ সম্পাদক শাহ ফরহাদ লিংকন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জায়েদুল হক কচিসহ ১০জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে বসুরহাট রূপালী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কার্যালয় উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী স্লোগান দিয়ে ওই স্থানে যায়। এসময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি হলে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ। এতে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানসহ অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়।
আহত খিজির হায়াত খান অভিযোগ করে জানান, মেয়র কাদের মির্জা আমাদের দলীয় অফিসের সব লুটপাট করে নিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর আমার মালিকানাধীন ঘরে নতুন কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তার বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়। এসময় মেয়র নিজে এবং তার বাহিনী আমাকে পিটিয়ে আহত করে। আমার গায়ের কাপড়- চোপড় ছিঁড়ে ফেলে। আমাকে উদ্ধার করতে আসলে আমার ১০-১৫জন সমর্থককেও তারা পিটিয়ে জখম করে। ঘটনায় মেয়র কাদের মির্জাকে প্রধান আসামি করে তিনি মামলা করবেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জের চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর ছোট ভাই বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছোড়ে। ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষের মুখে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক মুজাক্কির’সহ ৭-৮জন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান মুজাক্কির।
Leave a reply