নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদে পূর্ণিমার প্রবল জোয়ারে নদীর পানি বিপদ সীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে পানির চাপ। এতে বাঁধ ছাপিয়ে পানি ঢুকে নদীর তীরবর্তী কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যে কোন সময় নতুন করে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় স্থানীয়রা।
সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুরের জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাউনিয়াসহ একাধিক পয়েন্টে বাঁধ ছাপিয়ে পানি আসছে। এসব একাকার বেড়িবাঁধ এখন ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের দুর্গাবাটিসহ একাধিক পয়েন্টে বাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে লোনা পানি প্রবেশ করেছে। দুর্গাবাটি বাঁধের কয়ে’শ ফুট বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, আগে থেকেই এসব বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভেঙে যাওয়ার প্রায় ৯ মাস পর কিছুদিন আগে এসব বাঁধের কয়েকটি পয়েন্ট মেরামত করা হয়েছে। তবে সোমবার (১৯ মার্চ) দুপুর থেকে প্রবল জোয়ারের চাপে হঠাৎ করেই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু কিছু স্থানে বাঁধ ছাপিয়ে পানি চলে আসছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় হাজার খানেক মানুষ স্বেচ্ছায় বাঁধ সংস্কার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি সংস্কার করা না গেলে পরবর্তী জোয়ারে নতুন করে প্লাবিত হতে পারে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগ ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, হঠাৎ করে এসব নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। অস্বাভাবিক ভাবে পানি বাড়ছে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে আমারা কাজ করছি। মঙ্গলবার দুপুরের জোয়ারে যে পরিমাণ পানির চাপ ছিল তা অস্বাভাবিক। রাতের জোয়ারে পানি এর চেয়ে বাড়লে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তাৎক্ষণিক কিছু বালুর বস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত এখনি এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব না।
উল্লেখ্য, আরবি শাবান মাসের ১৫ তারিখ রাতে শবে বরাত ও বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৫ ও ১৬ চৈত্র এই রাতে ভরা-পূর্ণিমা। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে এটি ২৯ ও ৩০ মার্চ। ভরা পূর্ণিমার কয়েকদিন আগে থেকেই চাঁদের আকর্ষণ বাড়তে থাকে। অভিকর্ষ-মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে এসময় সমুদ্রের পানি ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করে, ভরা পূর্ণিমার রাতে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠে, ঢল নামে নদ-নদীতে।
Leave a reply