৯ বছর অফিসে অফিসে ঘুরেও নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারেননি আওয়াল!

|

ভুক্তভোগী আব্দুল আওয়াল।

স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:

নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে গত ৯ বছর ধরে সরকারি দফতরে প্রতিনিয়ত ধর্ণা দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল আওয়াল (৩১)।

আওয়াল নেত্রকোণার মদন পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকার প্রতিনিধি ও মদন উপজেলার করোনা বিষয়ক কমিটির সমন্বয়ক।

২০১২ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদে আব্দুল আওয়ালকে মৃত উল্লেখ করা হয়। এ কারণে চাকরির আবেদনের পাশাপাশি সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন আব্দুল আওয়াল। এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য করোনার টিকা পর্যন্ত নিতে পারেননি তিনি। এ নিয়ে খুবই দুর্বিষহ দিন অতিবাহিত করছেন আওয়াল।

এ প্রসঙ্গে আক্ষেপ করে আওয়াল বলেন, নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে গত ৯ বছর ধরে আবেদন করে উপজেলার নির্বাচন অফিসে ঘুরছি। নির্বাচন অফিসাররা আশ্বাস দিলেও এখনও জীবিত হতে পারলাম না। আমি জানি না কবে জীবিত হতে পারবো। ২০১৪ সালে পৌরসভার মেয়রের কাছ থেকে আমি যে জীবিত আছি এ বিষয়ে একটি প্রত্যয়ন নিয়ে কোনোভাবে সাধারণ কাজ কর্ম করছি।

তিনি বলেন, আমি সরকারি আবেদনসহ কোনো ধরনের আবেদন করতে পারছি না। আমার সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। আমার বাড়িটি খারিজ করা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু কিছুই করতে পারছি না। আমি আজ সমাজে জীবিত থাকলেও কাগজে মৃত আছি।

আওয়াল আরও বলেন, কেনো আমাকে ভোটার তালিকায় কর্তন করা হলো বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। একই সঙ্গে দ্রুত বিষয়টি সংশোধন করে জীবিত ভোটার আইডি পাওয়ার জোর সুপারিশ করেছেন আওয়াল।

এ ব্যাপারে মদন উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মাহবুব আলম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। একজন মানুষ জীবিত থাকা সত্ত্বেও তার ভোটার আইডি মৃত বহন করতে হচ্ছে, মানতে পারছি না। উপজেলা নির্বাচন অফিস দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে আমি মনে করছি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. হামিদ ইকবাল বলেন, ২০১২ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তথ্য সংগ্রহকারী সাংবাদিক আওয়ালকে হয়তো মৃত উল্লেখ করেছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি নতুন যোগদান করেছি। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম তিনি লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি হেড অফিসে কথা বলবো।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply