কোম্পানীগঞ্জের সহিংসতা নিয়ে ভিডিওতে যা বললেন কাদের মির্জা!

|

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরনবী চৌধুরী গুলিবিব্ধ হয়েছেন। তার কিছুক্ষণ পরে এক ভিডিও বার্তায় এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা।

ভিডিওতে তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত দুঃখিত ও ভারাক্রান্ত। গত তিন মাস যাবত আমার ওপর একতরফা অত্যাচার চলছে। আমি যখন অপরাজনিতীর বিরুদ্ধে কথা বলেছি, আমি যখন বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা বিরুদ্ধে কথা বলেছি, আমি যখন টেন্ডারবাজি, চাকরী বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছি তখনই আমার ছোটভাই শাহাদাৎ ও আমার ছেলে তাসিককে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র তরা হয়েছে।

তিনি বলেন, একরামুল চৌধুরী, নিজাম হাজারির অপরাজনিতীর বিরুদ্ধে বলার কারণে তারা তাদের সমস্ত শক্তি ও অর্থ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। এ পর্যন্ত আমি ৬ বার আক্রমণের শিকার হয়েছি। আমার পৌরসভাতে দই হাজার গুলি করেছে একবার। গত দুইদিন আগে প্রকাশ্যে দিবালোকে চাঁদাবাজ সবুজ, হেফাজত নেতা ও মাদক সম্রাট রুবেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার পৌরসভাতে হামলা করেছে।

অভিমান প্রকাশ করে কাদের মির্জা বলেন, আমার মত দলের জন্য এত কষ্ট কেউ করেনি। সাতচল্লিশ বছরে আমি সেই ঢাকা থেকে কোম্পানীগঞ্জের নানা বিষয়ের সাক্ষী, অনেক সত্য কথা আমি বলতে পারবো।

তিনি বলেন, একরাম নিজামীর অর্থে কথা বলার সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। সাংবাদিকরাও আজ কথা বলতে পারছেন না। তারা সত্য কথা বলতে গেলে তারা সেখানে বাধা প্রদান করেন।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, এখানে দুইটা হত্যা হয়েছে। দুইটারই আসামি আমার অনুসারীরা। তিনটা পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা হয়েছে সবগুলোর আসামি আমি এবং আমার অনুসারীরা। এসব কিছুই আমার ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টার পাড়া দুই চেয়ার ম্যানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে।

সেতুমন্ত্রীর ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত বলয়ের নেতা ফখরুল ইসলাম রাহাত আহত নুরনবী চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে জানান, নুরনবী চৌধুরী মোটরসাইকেল যোগে নিজ বাড়ি থেকে কয়েকজন অনুসারী নিয়ে বসুরহাট বাজারে আসার পথে পৌরসভার মাস্টার পাড়া এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা কেচ্ছা রাসেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে তিনি দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।

পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সন্ত্রাসী কেচ্ছা রাসেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাকে পিটিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দেয়। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. সেলিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনি ডান পায়ের হাটুর নিচে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়ে তিনি ঘোষণা দেন, আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না, জনপ্রতিনিধিত্ব করবেন না। ওইদিন দুপুরে নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাস দিয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাদের মির্জা লেখেন, ‘আমি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। ভবিষ্যতে কোনো রকম কোনো জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। ভবিষ্যতে আমি কোনো রকম কোনো দলীয় পদ-পদবির দায়িত্ব নেব না।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply