বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও সরঞ্জাসম উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার ভোর ৫টার দিকে বান্দরবান সেনা জোনের সেনাসদস্যরা নোয়াপাতাং নামক এলাকায় একটি সফল অভিযান পরিচালনা করে।
সম্প্রতি বান্দরবান এলাকায় অপু চাকমা নামক জেএসএস (সন্তু) দলের এক সশস্ত্র সন্ত্রাসীর কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছিল। বান্দরবান ও তদসংলগ্ন এলাকায় উক্ত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি, অস্ত্র লেনদেন এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। এ প্রেক্ষাপটে, অপু চাকমা ও তার সন্ত্রাসী দলের বিরুদ্ধে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডার এর নেতৃত্বে অভিযান দলটি নানা প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা, দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে অভিযান এলাকায় পৌঁছায়। অভিযান দল আস্তানা এলাকার সন্নিকটে পৌঁছালে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রাণভয়ে আস্তানা ত্যাগ করে গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়। এসময় সেনাসদস্যদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ গুলি বিনিময় হয়।
পরবর্তীতে সন্ত্রাসীদের আস্তানা তল্লাশি করে ম্যাগজিন ভর্তি ১টি ৯মি.মি. পিস্তল, একে-৪৭ এর ম্যাগজিন, একাধিক অ্যামোনিশন বাউন্ডুলিয়ার, ধারালো দেশিয় অস্ত্র, কমান্ডো নাইফ, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, যোগাযোগের যন্ত্র (ওয়াকিটকি), সোলার চার্জার, বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, ১৩টি মোবাইল ফোন, জেএসএস এর আদর্শ ও নীতিমূলক বই, ডায়েরি, জেএসএস এর সশস্ত্র অঙ্গসংগঠনের ব্যবহৃত জলপাই রং এর একাধিক ইউনিফর্ম ও জুতা, দেশিয় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, চাঁদা হিসেবে আদায়কৃত বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং জেএসএস এর চাঁদা আদায়ের রশিদ, পাড়া প্রতি টাকা আদায়ের হিসাবের নথি, সন্ত্রাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত ব্যাগ ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, কিছুদিন যাবৎ জেএসএস (সন্তু)’র এই সশস্ত্র সংগঠনটি নিজেদেরকে Jummo Liberation Army (স্বাধীন জুম্ম সেনাবাহিনী) নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে দেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিল বলে জানা যায়।
Leave a reply