পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
এক বছর পর আবারও কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসলো মৃত ডলফিন। প্রায় ১০ ফুট লম্বা এ ডলফিনটি রোববার দুপুরে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পশ্চিমে লেম্বুরবন এলাকায় পাওয়া যায়।
জেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মোল্লা এমদাদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এবং কুয়াকাটা পৌরমেয়রকে বলা হয়েছে।
স্থানীয় টুরিস্ট ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া প্রথমে এটি দেখতে পেয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করেন। বাচ্চু মিয়া জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লেম্বুরবনে লকডাউনে প্রাকৃতিক দৃশ্যের কিছু ছবি তুলতে সেখানে যান। আধাঘণ্টা পর দুপুর বারোটার দিকে হঠাৎ সৈকতে মৃত ডলফিনকে দেখতে পেয়ে কিছু ছবি তোলেন। এরপর স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ফোন দিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন।
তিনি জানান, স্থানীয়দের কাছে এটি শুশক নামে পরিচিত। গতবছর ঠিক এখানেই আরও ২টি ডলফিন মৃত অবস্থায় ভেসে আসে। পরে তা প্রশাসনের লোকজন মাটি চাপা দিয়ে রাখে। বাচ্চু আরও জানান, এটি লম্বায় প্রায় ১০ফুট হবে। ডলফিনটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সাস্টেনেবল মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের বরিশাল বিভাগের পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, সাগরে চলাচলের সময় হঠাৎ এগুলো পানির উপরে উঠে অনেক বেশি শ্বাস গ্রহণ করে। একসাথে অনেক বেশি শ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ করে অনেকক্ষণ পানির নীচে থাকতে পারে। যে কারণে স্থানীয়রা এগুলোকে শুশুক বলে।
তিনি জানান, মূলত এসব ডলফিন গভীর সাগরে চলাচলরত বাণিজ্যিক জাহাজ বা বড় বড় ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার ট্রলারের নীচের অংশে ধাক্কা লেগে আহত হতে পারে। আবার সাগরে ম্যাকানাইজ জাতীয় বড় বড় বেহুন্তি জাল ব্যবহারের কারণেও এসব মাছ আহত হতে পারে। তিনি বলেন, গত বছর কুয়াকাটায় যে তিনটি ডলফিন মৃত ভেসে উঠেছিল সেগুলো নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদনে এই বেহুন্দি জালের ব্যবহারের প্রভাবকেই দায়ী করা হয়েছিল। এটিও ওই একই কারণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
জেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে আমি কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। এছাড়া মাছটি মাটি চাপা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলেছি। তিনি বলেন, কেন কী কারণে মাছটি মারা গেলে সেটি উদঘাটনের জন্য পোস্টমর্টেম দরকার কিন্তু সেই ব্যবস্থা মৎস্য বিভাগের নেই। এটির দায়িত্ব বিভাগীয় বন বিভাগের।
Leave a reply