জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশের আইন কি রোজিনা ইসলামকে সুরক্ষা দিতে পারে?

|

রোজিনা ইসলাম।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে করা মামলাটিতে অভিযোগ করা হয়েছে তিনি এক কর্মকর্তার কক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় সরকারি নথি চুরির চেষ্টা করেন এবং মোবাইলে ছবি তোলেন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট এই আইন অনুযায়ী রোজিনা ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

যদিও রোজিনা ইসলামের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি নিয়ে তার করা কিছু প্রতিবেদনের জন্য তিনি আক্রোশের শিকার হয়েছেন।

একজন সাংবাদিককে এই আইনে আসামি করে মামলা দেওয়ার পর দেশের স্বাধীন গণমাধ্যম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ এবং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) বিধিমালা অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের সাথে সাংঘর্ষিক বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‌যে তিনটি ধারায় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার বর্ণনা এফআইআরের মধ্যেও উল্লেখ নেই। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) বিধিমালা ২০১১ অনুসারে, জনগণের স্বার্থে দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য প্রকাশে কোনো বাধা নেই বরং তথ্য প্রকাশকারীর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং পুরস্কৃত করার কথা বলা হয়েছে। এমনকি কেউ যদি এই বিধি ভঙ্গ করে, তবে এই আইনে তার বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ রয়েছে বলেও জানান সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

মানবাধিকারকর্মী এবং আইনের শিক্ষক রেজাউর রহমান লেনিন জানান, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন ২০১১ এবং নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ অনুযায়ী রোজিনা ইসলাম এই মামলাটি থেকে প্রতিকার পেতে পারেন।

নতুন একাধিক আইন প্রণয়ন করায় ব্রিটিশ আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনটি বাতিল করা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অনুযায়ী রোজিনা ইসলামের তথ্য সংগ্রহের ধরন তথা ‘তথ্য চুরি’ কোন পর্যায়ের সংবেদনশীল এবং নতুন প্রণীত আইনগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক এই আইনে করা মামলাটি থেকে রোজিনা ইসলাম মুক্তি পাবেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply