ফ্রান্সে জনপ্রিয় হচ্ছে পোকা দিয়ে তৈরী বিভিন্ন খাবার। চলতি বছরের শুরুতে পোকাকে খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউরোপের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা। এরপর থেকেই অঞ্চলটির বিভিন্ন দেশে বেড়েছে পোকার তৈরি বিভিন্ন খাবারের চাহিদা। প্যারিসে শুধু পোকা দিয়ে খাবার তৈরি হয় এমন রেস্তোরাও চালু হয়েছে।
প্যারিসের জনবহুল এলাকার সেই রেস্তোরাটি এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে পোকা দিয়ে তৈরি নানা রকম খাবারের জন্য। পোকার স্বাদ নিতে রীতিমতো ভিড় করছেন খাদ্যরসিকরা। তারা জানান, শুরুতে কিছুটা অস্বস্তি লাগলেও এর স্বাদ সত্যিই অসাধারণ। কেউ কেউ তো রীতিমতো পোকা দিয়ে তৈরী পাস্তা আর সালাদের ভক্তই বনে গেছে।
রেস্তোরাঁর প্রধান শেফ লর্যাঁ ভেইয়েত জানালেন, ভোজনরসিকদের কাছে স্বাদের ভিন্নতা আনতেই এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। শুধু ফ্রান্সই নয়, পুরো ইউরোপজুড়েই জনপ্রিয় হচ্ছে পোকার বিভিন্ন রেসিপি।
তিনি বলেন, মূলত দুই কারণে এমন উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন। প্রথমত, পোকামাকড় নিয়ে মানুষের মাঝ থেকে অহেতুক ভীতি দূর করা। দ্বিতীয়ত, খাবারের মাঝে ভিন্নতা নিয়ে আসা। আশার কথা এই যে, মানুষের কাছ থেকে অসাধারণ সাড়া পেয়েছি।
স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে নিজেই এই পোকার চাষ করেন বলে জানালেন শেফ লর্যাঁ ভেইয়েত। লার্ভা জাতীয় পোকাই বেশি জনপ্রিয় বলেও জানালেন তিনি। এ নিয়ে তিনি বলেন, এই পোকা আমি নিজেই চাষ করি। এদের ওটস, রুটি আর সবজির উচ্ছিষ্ট দেয়া হয়। তারপর রোদে শুকিয়ে এদের রান্না করি।
চলতি বছরের শুরুতে পোকাকে খাদ্য তালিকায় স্থান দেয় ইউরোপের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইএফএসএ। তবে সব ধরণের পোকাকে খাদ্য তালিকায় অনুমোদন দেয়নি সংস্থাটি। শুধুমাত্র গুবরে জাতীয় পোকার শুককীট বা লার্ভাকে এবং ফড়িং জাতীয় নির্দিষ্ট কিছু পোকাকে খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
ইএফএসএ’র মুখপাত্র স্টিফেন কার্সমেকার বলেন, এসব পোকায় খুবই উচ্চপর্যায়ের আমিষ বিদ্যমান। ইউরোপের অনেক দেশেই এটা সহজলভ্য। এটাও খেয়াল রাখতে হবে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট চলছে। এ ধরণের পোকাকে খাদ্য তালিকায় স্থান দিলে সেই সংকট সমাধানেও বড় ভূমিকা রাখা সম্ভব। এ ধরণের কীট চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার পাশাপাশি আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও মুখরোচক খাদ্য হিসেবে সমাদৃত।
Leave a reply