ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে এই আহবান জানান ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন শান্তি প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিরা ‘বহুপাক্ষিক মধ্যস্থতা’ চায়। আব্বাস আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের একক দূতিয়ালীতে আস্থা নেই ফিলিস্তিনিদের।’
এর আগে শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা প্রত্যাখান করেছিল ফিলিস্তিন। কারণ জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই বিষয় নিয়ে বিরোধের জেরে ফিলিস্তিনিদের সহায়তাও বন্ধ করে ওয়াশিংটন। সব মিলিয়ে গত কয়েক মাস ধরে ফিলিস্তিন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ টানাপোড়েনের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে প্রথমবারের মতো এক বৈঠকে দু’দেশের প্রতিনিধি। যেখানে আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে ওয়াশিংটন। জাতিসংঘ অধিবেশনে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সংলাপের তাগিদ এসেছে ওয়াশিংটনের তরফ থেকেও।
অবশ্য মার্কিন দূত নিকি হ্যালি জানিয়েছেন শান্তি সংলাপে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে ফিলিস্তিনকেই। তবে জেরুজালেম ইস্যুতে কিছুতেই অবস্থান পাল্টাতে রাজি নয় ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে বিশ্বের প্রধান প্রধান গণমাধ্যমগুলো বলছে, মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন পরিকল্পনা প্রস্তুত করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালি বলেন, “জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিরা মানবে না এটাই স্বাভাবিক। তাদের সামনে সহিংসতা কিংবা আলোচনা দুটি পথই খোলা রয়েছে। আমার মনে হয় প্রথম পথে হাঁটা অর্থহীন। ফলে মাহমুদ আব্বাসের প্রতি আমাদের আহ্বান নিজ জনগণের কথা চিন্তা করে আলোচনায় রাজি হোন।”
জবাবে মাহমুদ আব্বাস বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে আমি গত বছর ৪ বার দেখা করেছি, জানিয়েছি শান্তি আলোচনায় আমাদের আগ্রহের কথা। কিন্তু ‘দুই রাষ্ট্র সমাধানের’ পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান জানাতে পারেনি। ফলে এ মুহুর্তে আন্তর্জাতিক শান্তি আলোচনার বিকল্প নেই। যেখানে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে কাজ করবে সব পক্ষ।”
অবশ্য জাতিসংঘে ইসরায়েলি দূত ড্যানি ডানন শান্তি প্রক্রিয়ায় স্থবিরতার জন্য ফিলিস্তিনকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন,”আমরা বিশ্বাস করি ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান দু’পক্ষের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে করা সবচেয়ে সহজ; কোন তৃতীয় পক্ষের এতে ভূমিকা নেই। আমরা বরাবরই উদ্যোগ নিয়েছি আলোচনার কিন্তু পিএলও’র তরফে সাড়া পাইনি। আশা করছি মাহমুদ আব্বাস বিষয়টি অনুধাবন করবেন।”
এই বক্তব্যের প্রতিবাদে বক্তব্য চলাকালীন সময়েই অধিবেশনস্থল ত্যাগ করেন প্রেসিডেন্ট আব্বাস। এছাড়া মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সাথেও সাক্ষাৎ করেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট।
Leave a reply