স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর:
নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারীদের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের এবং ২০০ বস্তা সরকারি গম আত্মসাতের অভিযোগ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) রাতে খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বাগাতিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের তিন অনুসারী তাকে চার ঘণ্টা আটকে রেখে পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে ৮ লাখ টাকা পাওনা উল্লেখ করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়।
পরে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কেউ তাকে মারধর করেনি। তিনি অভিযোগ তুলে নেবেন। তবে কেন অভিযোগ দিলেন, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।
ঘটনার পরদিন শুক্রবার দুপুর ১টায় ওই কর্মকর্তার ব্যক্তিগত জিম্মা থেকে ২০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন। এসময় রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি জেলা খাদ্য কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েই গুদামের বাইরে আলাদা ভবনে গম মজুদ করেছেন। তবে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা রবীন্দ্র লাল চাকমা অনুমতির দাবি অস্বীকার করেন।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, গমগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে গুদামজাত করা হয়েছ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি অবহিত করে তার বিরুদ্ধে দাফতরিক ব্যবস্থা নিতে জেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা রবীন্দ্র লাল চাকমা বলেন, গুদামের বাইরে গম রাখতে হলে নিয়ম অনুযায়ী খাদ্য বিভাগকে অবহিত করে অনুমতিপত্র নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি এমনকি জানানোও হয়নি। বিষয়টি খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
রফিকুল ইসলামের থানায় অভিযোগ প্রসঙ্গে নাটোর ১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, খাদ্য কর্মকর্তার অভিযোগ সাজানো। তাকে কেউ আটকে রেখে মারধর করেনি। তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ। অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ইন্ধনে তিনি মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন। এছাড়া তার গম আত্মসাতের ঘটনা উল্লেখ করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তিনি।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।
তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a reply