করোনাকালে মূল প্রচার মাধ্যমের পাশাপাশি ওটিটি বা ওভার দ্যা টপ এখন বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। সারা বিশ্বেই এই মাধ্যমে গল্পনির্ভর কাজগুলো দর্শক নিচ্ছে অন্যভাবে। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশের ওয়েব সিরিজ ‘মহানগর’ প্রশংসা কুড়াচ্ছে সবার।
এই শহর, একটি রাত। জীবন গল্পের নানা বাঁক। প্রেম, অপরাধ, লোভ কিংবা রাজনীতিকে ঘিরে আবর্তিত চরিত্রগুলো অনেকটাই চেনা। চেনাজানা চরিত্রগুলোই কল্পনার মিশেলে পায় ভিন্নতা। প্রশ্নবিদ্ধ করে বর্তমান সময়কে। তাতেই নাগরিক জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠে ‘মহানগর’ শিরোনামের ওয়েব সিরিজটি।
কেন্দ্রীয় চরিত্র ওসি হারুন পুলিশের চিরচেনা এক প্রকাশ। তবে তার সাথে থাকা এস আই মলয় সেই খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসে ক্রমান্বয়ে।
শহরের ধনী ব্যবসায়ী পুত্র আফনান চৌধুরীর গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায় নিরীহ এক সাইকেল চালক। আফনানকে বাঁচানোর মিশন নিয়ে এগোতে থাকেন ওসি হারুন। ফাঁসিয়ে দিতে চান গল্পের আরেক নির্দোষ চরিত্র আবির হাসানকে।
ঘটনার তদন্তে মাঝরাতে থানায় আসেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। তাতে ঘুরে যায় গল্পের গতিপথ। শেষে উঠে আসে এই শহরে ঘটে যাওয়া আলোচিত এক ঘটনার প্রায় অনুরূপ এক গল্প। তাতেই মহানগর হয়ে উঠে সময়কে প্রশ্নবিদ্ধ করা এক অন্যরকম গল্প। এ গল্প এই শহরের, এই মহানগরের।
অভিনয়ে ওসি হারুন চরিত্রে মোশাররফ করিম সব সময়ই অনন্য। এখানেও ঠিক তেমন।
পুলিশ কমিশনার চরিত্রে জাকিয়া বারী মম’র এমন চরিত্রায়ন হয়তো প্রথম দেখল আমাদের দর্শক।
আফনান চরিত্রে শ্যামল মাওলাও ছাড়িয়ে গেছেন ব্যক্তি সত্ত্বাকে। হয়ে উঠেছেন শহরের অনেকটা চেনা এক বাস্তব চরিত্র। শিল্পের দায়বদ্ধতা হয়তো এখানেই।
বাকিরাও উজ্জ্বল যার যার চরিত্রে। নেপথ্যের কাজগুলোও প্রশংসার দাবি রাখে। নির্মাতা হিসেবে আশফাক নিপুণ এই কাজে ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকেই।
ওয়েব সিরিজটির নির্মাতা আশফাক নিপুন যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, যেহেতু এটা আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ তাই আমি চেষ্টা করেছি আমাদের সময়কে আর এই সময়ের মহানগরকে তুলে ধরার। আমরা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সবেমাত্র অভ্যস্ত হচ্ছি। এখনই যে প্রশংসা পাচ্ছি তা অবশ্যই আমাদেরকে অনেক উৎসাহ দিচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসা জানাচ্ছেন অনেকেই। বাইরের দেশেও আলোচিত হচ্ছে বাংলাদেশের এমন নির্মাণ, অভিনয় কিংবা গল্পের বুনন।
তবে ভাবা যেত গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থাপন নিয়ে। মাথায় জট বাঁধে আরও কিছু প্রশ্ন। হয়তো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর মিলবে দ্বিতীয় সিজনে।
Leave a reply