ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দুই কোটিপতি ব্যবসায়ী নিয়েছেন করোনা কালীন সময়ে সরকারি প্রণোদনার ৫০০ টাকা ও ১০ কেজি চাল। গত রোববার (৪ জুলাই) কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্মিত অডিটোরিয়ামে এ অনুদান গ্রহণ করেন তারা।
সরকারি অনুদান নেয়া দুই ব্যবসায়ী হলেন, শহরের কাঁচামাল হাট এলাকার রাজ এন্টারপ্রাইজের মালিক রাজু দাস ও থানাপাড়া পূজামণ্ডপ এলাকার নিলয় জুয়েলার্সের মালিক খোকন সরকার। জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদের সদস্যদের সরকারি প্রণোদনা প্রদানের জন্য তালিকা চাওয়া হলে যাত্রা পরিষদ শিল্পীদের নামের তালিকা প্রদান করেন সংগঠনের সভাপতি এস.এম আসাদুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সরকার। যেখানে এই দুই ব্যবসায়ীর নাম অন্তর্ভূক্ত ছিল।
এরপর গত রোববার (৪ জুলাই) কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে তালিকাভূক্তদের নগদ ৫০০ টাকা ও ১০ কেজি চাল প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, ইউএনও সুবর্ণা রাণী সাহা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হেল আল মাসুম সহ অন্যান্যরা। এ সময় ব্যবসায়ী রাজু দাস ও যাত্রী শিল্প পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খোকন সরকার ও এই প্রণোদনার টাকা ও চাল সংগ্রহ করেছেন।
এদিকে, দুই কোটিপতি ব্যবসায়ী সরকারি প্রণোদনার টাকা নেয়ায় শহর জুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রণোদনা পাওয়া রাজু দাসের রাজ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও তার জি গ্যাস কোম্পানি, ভিশন গ্যাস স্টোভ, পিকআপ ভ্যান, সরকার অনুমোদিত সার কীটনাশক বিক্রি, ও মোবাইল ফোন এর ডিলার শিপ রয়েছে। তার দুইটি বড় গোডাউনও রয়েছে। যেখানে সার্বক্ষণিক ৩ থেকে ৪ হাজার গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ থাকে।
অপরজন খোকন সরকার একজন প্রতিষ্ঠিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী। নিলয় জুয়েলার্স নামে তার একটি জুয়েলারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শহরের থানা পাড়া এলাকায় বসবাস করেন। এছাড়াও তিনি যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদের কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।
সরকারি প্রণোদনা পাওয়া ব্যবসায়ী রাজু দাস সরকারি প্রণোদনার টাকা ও চাল পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তার নাম দিয়েছেন। তার যাত্রা শিল্প সমিতির কার্ডও আছে। অডিটোরিয়ামে গিয়ে নগদ ৫০০ টাকা ও ১০ কেজি চাল নিয়েছি। এরপর বাইরে এসে গরীবদের দিয়েছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খোকন সরকার করোনার প্রণোদনার টাকা ও চাল নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, করোনা কালে কোথাও কোন প্রোগ্রাম হয় না। অনেকে এ সময়ে খুব কষ্টে আছে। এজন্য সরকার থেকে দেয়া প্রণোদনার সহায়তা নিয়ে তিনি অন্য একজনকে দিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
কালীগঞ্জ যাত্রা শিল্প উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি এস.এম আসাদুজ্জামানের মোবাইলে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Leave a reply